
বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা ; ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় যে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন, তাদের একজন অবিন্তা। যুক্তরাষ্ট্রের এমোরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অবিন্তা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠি ফারাজ আইয়াজ হোসেন এবং ভারতীয় বন্ধু তারিশি জৈনের সঙ্গে ক্যাফেটিতে গিয়েছিলেন।
কমান্ডো অভিযানে রেস্তোরাঁটি জঙ্গিমুক্ত করার পর তাদের লাশ পাওয়া যায়।
হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে বলিউডে ফারাজ নামে যে সিনেমাটি তৈরি হয়েছে, তা ভুল গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বলে দাবি করেছেন সেদিন নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ।

রুবা বলেন,“আমার কথা হল মুভিটার নাম কেন ‘ফারাজ’ হবে? আর আমাকে কেন প্রিস্ক্রিনিং করতে দেওয়া হল না, যদি আমার মেয়েকে সেখানে নাই রাখা হবে। নিশ্চয়ই রাখা হয়েছে। অবিন্তা হয়েছে আয়েশা, ইভেন আমি আছি মুভিটাতে রাবেয়া নামে। শুধু তাই না আমার মেয়ের ছবিও দেখানো হয়েছে। তাহলে আমার মেয়ের প্রাইভেসি কোথায় থাকল? আমার প্রাইভেসি কোথায় থাকল?”
ভারতের আদালতেও গিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি ঘটনাটা জানতে পারি ২০১৯ সালে। তখন থেকে চেষ্টা করেছি উকিল নোটিস দিয়ে বিভিন্নভাবে এটিকে থামানোর জন্য। তারপর মহামারী যখন শুরু হল পুরো দুনিয়া অন্য রকম হয়ে যায়। তখন আমার ধারণা হয়েছিল হয়ত মুভিটা বন্ধ হয়ে গেছে।

“২০২১ সালের ৫ আগস্ট আমি প্রথম পোস্টারটা পাই। পোস্টারটা পাওয়ার পর মুভির নামটা জেনেছি। তখন বুঝলাম আসলে মুভিটা বন্ধ হয়নি, এতদিন তারা মুভিটা বানিয়েছে। তখন থেকেই আজকের দিন পর্যন্ত আমি ডেইলি হাই কোর্টে (দিল্লির আদালত) খোঁজ নিই। এখন পর্যন্ত আমার কেইসটা চলছে। যারা মুভিটা বানিয়েছে ভারতের সব ডিরেক্টরদের সাথে আমি ফাইট করে যাচ্ছি।”
জঙ্গি হামলায় মেয়েকে হারানো রুবা ধরা গলায় বলেন, “গত সাত বছরে আমার কিন্তু কারও সঙ্গে ওঠাবসা নেই। আমার মেয়ে চলে যাওয়ার পর আমি আমার দুনিয়াটা বন্ধ করে দিয়েছি। কারও সাথে দেখা করি না, কারও সাথে কথা বলি না।
“এটা (সিনেমা) দেখা কোনো মায়ের পক্ষে সম্ভব না। আমি মা, আমার মেয়েকে আমি হারিয়েছি। মেয়ের জীবন কীভাবে চলে গেছে সেটা বড় পর্দায় দেখাচ্ছে, অন্যরা উপভোগ করছে এবং অন্য মানুষ সেখান থেকে ব্যবসা করে পয়সা নিচ্ছে, এগুলো মা হিসেবে আমি কীভাবে চাইব।”