
ম্যানিলা: ফিলিপাইনে অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালানোর ফলে বিগত সাত সপ্তাহে এক হাজার ৯০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ প্রধান।
মঙ্গলবার পুলিশের মহাপরিচালক রোনাল্ড ডেলা রোসা সিনেট শুনানিতে জানান, প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে ক্ষমতায় আসার পর, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার ফলে ইতিমধ্যেই এক হাজার ৯০০ জনের বেশি নিহত হন। এর মধ্যে পুলিশি অভিযানে প্রায় ৭৫০ জন নিহত হন।
তিনি বলেন, ‘মাদক ব্যবহারকারী কিংবা মাদক ব্যবসায়ীদের হত্যা করার ঘোষিত কোন নীতি নেই। আমরা কসাই নই। তাই বাকী মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চলছে।’
এর আগে প্রেসিডেন্ট দুতার্তে নাগরিকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছিলেন, কোন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারে বাধা দিলে তাকে যেন গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করলে তা বেআইনি হবে না বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
এদিকে জাতিসংঘ ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে হত্যার অনুমতি দেয়াকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় দুতার্তে জাতিসংঘ থেকে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছিলেন।
জাতিসংঘ জানায়, ফিলিপাইনে মাদক সংক্রান্ত হত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়া গভীর উদ্বেগের একটি বিষয়।
ফিলিপাইনি সিনেটের যৌথ তদন্তের বিষয়টি পরিচালনা করছেন সিনেটর লেইলা ডি লিমা। নজিরবিহীনভাবে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষকে এর ব্যাখ্যা দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। সিনেটের শুনানিতে নিহতদের স্বজনদের বক্তব্যও শুনা হবে।
পুলিশ প্রধান জানান, ধরপাকড়ের সময় মোট এক হাজার ৯১৬ জনের মৃত্যুর খবর রেকর্ড করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশি অভিযানে ৭৫৬ জন নিহত হন।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘তদন্তে দেখা যাচ্ছে সবগুলো মৃত্যু মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এদের মধ্যে ৪০ জনকে ডাকাতি কিংবা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি জানান, মাদক ব্যবসার সঙ্গে ৩০০ পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত আছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে এবং তাদের অপসারণ করা হবে বলে সতর্ক করে দেন তিনি। সূত্র: বিবিসি, ইয়াহু নিউজ
প্রতিবেদন: ফারহানা করিম, সম্পাদনা: সজিব ঘোষ