
ঢাকা: ‘সরকার বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে’ জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে বজ্রপাতের আগাম বার্তা দিতে সরকার কাজ করছে।’
শনিবার রাজধানীর হোটেল অবকাশে ‘বজ্রপাতে করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এ বছর বজ্রপাতে এই পর্যন্ত শতাধিক লোক মারা গেছে। সরকার তাদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে ১৮ লাখ টাকা দিয়েছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ্ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এম আরশাদ মোমেন, অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরিন ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র কান্ট্রি প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর নাওকি মাতসুমুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু।
কর্মশালায় বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞতা, পূর্ব প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, জনগণের করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে বিশেষজ্ঞ, গবেষক, সংবাদকর্মী, জনপ্রতিনিধিসহ ১৭ ক্যাটাগরির স্টেকহোল্ডার অংশগ্রহণ করেছেন বলে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে।
সূত্রে প্রকাশ, বজ্রপাতে মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আগাম বার্তা দেয়ার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন, পাঠ্যসূচিতে বজ্রপাতে করণীয় বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ, বজ্রপাত ঝুঁকি নিরূপণে জাতীয় গাইডলাইন প্রণয়ন, বজ্রপাত ব্যবস্থাপনায় জিও-এনজিও সমন্বয় সাধন, বিল্ডিং কোড মেনে ঘরবাড়ি নির্মাণ, বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারসহ সচেতনতা সৃষ্টিতে স্থানীয় সরকার কাঠামোর ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
কর্মশালায় জলবায়ু পরিবর্তন তথা উষ্ণায়নের কারণে বজ্রপাতের মাত্রা বেড়ে গেছে কিনা তার ওপর গবেষণার জন্য প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী গবেষকদের অনুরোধ করেন। মোবাইল টাওয়ারের কারণে বজ্রপাতের অধিক্য প্রমাণিত নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বজ্রপাতের সময় টেলিফোন লাইন ব্যবহার না করাই উত্তম।’ বজ্রপাত হয় এমন মেঘের ধরণ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ড. এম আরশাদ মোমেন। উপমহাদেশে দীর্ঘ খরার কারণে এই বছর বজ্রপাত বেশি হচ্ছে বলে আবহাওয়াবিদ মো. শামিম হাসান ভূইয়া উল্লেখ করেন।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসকে/জাই