
ঢাকা: পুলিশি রিমান্ডে থাকা মাদারীপুরে ফয়জুল্লাহ ফাহিমের বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সঠিক ঘটনা বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সরকারের সংশ্লিদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।
রিমান্ডে থাকা ফাহিম বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নাকি প্রকৃত ঘটনা ও দোষীদের নাম আড়ালে রাখার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়ে সুস্পষ্ঠ ব্যাখ্যা দাবি করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী জুলফিকার আলী।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশেরআইজিপি, পুলিশ সুপার মাদারীপুর, মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। অন্যথায় দেশ ও জাতির মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে উক্ত ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রিট করা হবে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী জুনু ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার এহসানুর রহামান।
পাঠানো নোটিশে বলা হয়, রিমান্ডে থাকা ফাহিম বন্ধুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনায় নাটকীয়তা ও রহস্য রয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে বন্ধুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা মানবাধিকার লংঘন দেশের প্রচলিত ফৌজদারি আইন ও হেফাজত আইন ও উচ্চ আদালত কর্তৃক রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত গাইড লাইন ও আদেশের পরিপন্থী।
মাদারীপুর সরকারি নাজিম উদ্দীন কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর উপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার গোলাম ফায়জুল্লাহ ফাহিম পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৮জুন শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় মাদারীপুর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মিয়ারচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ১৭জুন শুক্রবার ফাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর পরদিন ফাহিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মিয়ারচর ঘটনাস্থলে ধান ও পাট ক্ষেতের মাঝখানে ফায়জুল্লার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে জানা যায়। তার হাতে পেছনের দিকে হ্যান্ডকার্প পরানো ছিল বলেও জানা যায়।
পুলিশ হেফাজতে থাকা রিমান্ডের আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। রিমান্ডে থাকা আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে পুলিশ সম্পূর্ন নিস্ক্রিয়তার ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে হয়। রিমান্ডে থাকা আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কেন আসামির পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদান করেন নাই তাও প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে থাকা আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও উক্ত অভিযানে কোনো দুস্কৃতিকারী দুর্বৃত্ত তথা পুলিশ সদস্য বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সরাসরি আহত বা নিহত হন নাই এবং পত্রপত্রিকার সূত্রে জানতে পারি এলকাবাসী জনান তারা কোনো গোলাগুলির আওয়াজ উক্ত সময় শোনেননি বা কাউকে পালাতে দেখেননি কিন্তু মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল মোর্শেদ সাংবাদিকদের জানান ফায়জুল্লাহকে নিয়ে অভিযানে গেলে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় এই সময় ফায়জুল্লাহ নিহত হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার এবং এলকাবাসীর বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তাদের বক্তব্য থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, রিমান্ডে থাকা ফাহিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনায় নাটকীয়তা ও রহস্য রয়েছে। পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা মানবাধিকার লংঘন দেশের প্রচলিত ফৌজদারী আইন হেফাজত আইন ও উচ্চ আদালত কর্তৃক রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত গাইড লাইন ও আদেশের পরিপন্থী।
অতএব, অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে রিমান্ডে থাকা ফাহিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে নাকি প্রকৃত ঘটনা ও দোষীদের নাম আড়ালে রাখার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে এ ব্যাপারে জাতির কাছে একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং কেন উক্ত ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে না? কেন উক্ত ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে ডিপার্টমেন্টাল এ্যাকশন নেয়া হবে না তা লিখিত আকারে জানানোর জন্য আপনাদের অত্র লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে অনুরোধ করা হলো।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এফএইচ/জাই