
বরিশাল: ঝড়ো হাওয়া, অঝোর ধারায় বর্ষণ ও সাথে একটানা অস্বাভাবিক বজ্রপাত বুকে কাপন ধরিয়েছে বরিশালবাসীর। শনিবার বিকেল থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করে।
বজ্রপাতের পূর্বে আলোর ঝলকানি ও ভয়ংকর শব্দে সবচেয়ে ভীত হয়ে পড়েছিল শিশুরা। ভয় ও আতংকে তারা চিৎকার, কান্নাকাটি করেছে।
বয়োবৃদ্ধরাও জানিয়েছেন, আগে কখনো এমন অস্বাভাবিক বজ্রপাতের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেননি।
শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার পর থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ছিলো সবচেয়ে আতংকের।
নগরীর পলাশপুরের বাসিন্দা শামীম আহম্মেদ বলেন, রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড বেগের বাতাস, মুষলধারা বৃষ্টির মধ্যে সেকেন্ডের কম সময়ের ব্যবধানে চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানি ও ভয়ংকর আওয়াজের বজ্রপাত মৃত্যু ভয় নিয়ে এসেছে।
তিনি জানান, ভয়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে মেঝেতে বসে থাকেন। বাসায় থাকা মোবাইল ফোন বন্ধ করে অজানায় আশংকায় কেটেছে কয়েক ঘন্টা বললেন পঞ্চাশোর্ধ ওই ব্যক্তি।
নগরীর নথুললাহবাদ এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, তার ৫ বছর বয়সী শিশু সন্তান ভয় ও আতংকে প্রসাব করে দিয়েছে। ওই পরিস্থিতির কারণে রোজাদাররা অনেকে সেহরি খেতে পারেননি। আলোর তীব্রতা ও বজ্রপাতের শব্দে অনেকে বাথরুমে যেতেও ভয় পেয়েছেন।
রাত আড়াইটা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত দক্ষিনাঞ্চলে বিদ্যুৎ ছিল না। বরিশাল নগরীর রুপাতলীর ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ উপ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে , সকাল ৯ টার পর থেকে ৩৩ কেভি সচল হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে সকল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
তবে কোনো কোনো এলাকায় ডালপালা অপসারণ না করার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের অপারেটর।
বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বলেন, অস্বাভাবিক বজ্রপাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন,বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাননি তিনি। তবে গাছপালা ও কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে।
অস্বাভাবিক বজ্রপাতের কারণ সম্পর্কে কোনো কিছু বলতে পারেননি বরিশাল আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া দফতরের অবজারভার বেলায়েত হোসেন জানান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়তো অস্বাভাবিক বজ্রপাত হতে পারে।
তবে বজ্রপাতের সময় ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানান তিনি। যা বেলা ১২টা পর্যন্ত ১১৭ মিলিমিটারে এসে পৌঁছে। বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ৪৩ কিলোমিটার।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/প্রতিনিধি/জাই