Wednesday, December 6th, 2023
বস্তুজগত মানুষের ভাবনাকাঠামোর ধার ধারে না
March 1st, 2017 at 10:21 am
বস্তুজগত মানুষের ভাবনাকাঠামোর ধার ধারে না

রাসেল পারভেজ: সময়ের সাথে মানুষের অভিজ্ঞতা বাড়ে, মানুষের ধারণা বদলায়। অনুসন্ধিৎসু মানুষের ক্ষেত্রে তার ঈশ্বর বিশ্বাস বিষয়ক অবস্থান পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা সব সময়ই থাকে। তেমন ভাবেই বেঁচে থাকার কোনো একটা পর্যায়ে ধারণ করা ঈশ্বর বিষয়ক বিশ্বাস আমৃত্যু অপরিবর্তিত থাকবে এটাও একটা গ্রহনযোগ্য বাস্তব সম্ভাবনা।

যারা নিয়মিত বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির খোঁজ-খবর রাখছে, তাদের ভাবনাকাঠামো এই ধরণের পরিবর্তন গ্রহন বর্জনে অনেক বেশী সাবলীল। ৫০০০ বছর আগে যে মানুষটা বলেছে, “সকল জীব যেমন জন্মগ্রহণ করে, এই মহাবিশ্বও একটা সময়ে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তার ধারণা ও বিশ্লেষণের ক্ষমতার বাইরের কোনো একটা কিছু এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত ছিলো।” তার এই বক্তব্য তার সময়ের প্রেক্ষাপটে হয়তো বৈপ্লবিক ছিলো। ধারণা ও বিশ্লেষণক্ষমতার বাইরের কোনো একটা স্বত্ত্বা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে এটা এখন একেশ্বরবাদী ধর্মের সৃষ্টিতত্ত্বের অংশ।

আধুনিক সময়ের সৃষ্টিতত্ত্ব কিংবা বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বে এমন কোনো উদ্দেশ্য প্রবণ সূচনার ধারণাকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমাদের বৈজ্ঞানিক ধারণার সীমাবদ্ধতায় আমরা হয়তো নিশ্চিত বলতে পারবো না বিগ ব্যাং মডেল আর ওসিলেটরি মডেল (যেখানে মহাবিশ্ব সংকুচিত হয়ে শুরুর অবস্থানে পৌঁছায় এবং পুরনায় প্রসারিত হতে শুরু করে এবং এই ঘটনাটা পৌণঃপুনিক ঘটতে থাকে) কোনটা অধিক বিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু উভয় পক্ষই সংকুচিত মহাবিশ্বের অস্তিত্ব মেনে নিয়েছে। এই মেনে নেওয়াটা আদর্শিক- দার্শনিক-ধর্মীয় বিশ্বাসজনিত কারণে না, বরং আমাদের নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করেছে মহাবিশ্ব ১৪০০ কোটি বছর আগের কোনো একটা সময়ে বিন্দুবৎ ছিলো।

বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণকে অস্বীকার করে শব্দে বাক্যে ধারণায় যে ধরণের মহাবিশ্ব কল্পনা করা হোক না কেনো সেটা যথার্থ হবে না। একই ধরণের বৈজ্ঞানিক ধারণা থেকেই বলা যায় আমরা বর্তমানে যে মহাবিশ্বে বেঁচে আছি, তর্ক বিতর্ক করছি- সে মহাবিশ্বের সকল বস্তু আমাদের জানাশোনা বৈজ্ঞানিক বিধিগুলোই অনুসরণ করছে। মহাকর্ষ, তড়িৎচুম্বকীয় বলগুলো মোটা দাগে সবার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। পরমাণুর কেন্দ্রে এবং পারমাণবিক সংঘর্ষে নিউক্লিয় বল কাজ করে। তড়িৎ চুম্বকীয় বল, নিউক্লিয় বল এবং মহাকর্ষীয় বল বিবেচনা করলে আমরা মহাবিশ্ব-নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যু ব্যাখ্যা করতে পারি। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াতে ঈশ্বরকল্পনা জাতীয় ভাববিলাসিতার কোনো প্রয়োজন নেই।

কথাটা আরও গুছিয়ে বলা যায়, আমাদের জ্ঞাত বৈজ্ঞানিক বিধিগুলো মেনে নিলে মহাবিশ্বের উদ্ভব এবং বিকাশের জন্যে সার্বভৌম কোনো ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রয়োজন নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষের অস্তিত্ব তাৎপর্যময় করতে মহাবিশ্বের অন্তর্গত কিংবা মহাবিশ্বের বাইরের কোথাও একজন ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রয়োজনীয়। এটা মানুষের ভাবনাকাঠামোর দায়- মহাবিশ্বের বস্তুজগত মানুষের এই ভাবনাকাঠামোর ধার ধারে না।

লেখক: ব্লগার


সর্বশেষ

আরও খবর

নোবেল প্রাইজ মহাত্মা-টলস্টয় পান না, পেয়েও নেন না দিউথা- জাঁ পলরা

নোবেল প্রাইজ মহাত্মা-টলস্টয় পান না, পেয়েও নেন না দিউথা- জাঁ পলরা


আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে সর্বসাধারণের মতামত

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে সর্বসাধারণের মতামত


বিএনপির মিছিলে থাকা তরুণ ভোটার কতটুকু জানে তারেকনামা

বিএনপির মিছিলে থাকা তরুণ ভোটার কতটুকু জানে তারেকনামা


বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক ও বেআইনি : পর্যবেক্ষক টেরি এল ইসলে

বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক ও বেআইনি : পর্যবেক্ষক টেরি এল ইসলে


নড়াই নদীর কষ্ট

নড়াই নদীর কষ্ট


মধ্যপ্রাচ্যে গাঁজা চাষ: সমস্যা না সম্ভাবনা ?

মধ্যপ্রাচ্যে গাঁজা চাষ: সমস্যা না সম্ভাবনা ?


কোরআন ও ইসলামে পীর কি?

কোরআন ও ইসলামে পীর কি?


এতকিছুর পরও বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘আমার সিরাজ’ বলেই সম্বোধন করেছেন

এতকিছুর পরও বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘আমার সিরাজ’ বলেই সম্বোধন করেছেন


প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরের সাফল্য:  আব্দুল মোমেন

প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরের সাফল্য: আব্দুল মোমেন


আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস

আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস