
বাংলাদেশের কাছে প্রায় সাতশো কোটি টাকা পাওনা আছে দাবি করে তা ফেরত চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এতথ্য জানিয়েছে।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের কাছে পশ্চিম পাকিস্তানের যে অর্থ পাওনা ছিল, তা বর্তমানে সাতশো কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা ৯.২১ বিলিয়ন পাকিস্তানি রূপি এবং ৬.৯২ বিলিয়ন বাংলাদেশি টাকা। অ্যাসেট ভ্যালুয়েশনের মধ্য দিয়ে প্রকৃত পাওনা নিরূপন করা হয়। অ্যাসেট ভ্যালুয়েশন এমন একটি প্রক্রিয়া যা ব্যবহার করে কোনো সম্পত্তির প্রকৃত অর্থমূল্য নিরূপন করা হয়। নির্দিষ্ট একটি সময়ে কোনো সম্পত্তির প্রকৃত অর্থমূল্য কত, তা ওই সময়ের নগদ অর্থ প্রবাহ, তুলনাযোগ্য মূল্যমান কিংবা লেনদেনের মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাত্তোরকালে পাকিস্তানও তাদের পাওনার ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের জুন মাসে এসে অর্থ প্রবাহ, তুলনাযোগ্য মূল্যমান কিংবা লেনদেনের মূল্যের ভিত্তিতে পাওনার পরিমাণ নির্ধারণ করে। পাকিস্তান স্টেট ব্যাংক জানায়, সরকারি অফিস, ঋণ ও আগাম সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তনের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের কাছে যে টাকা পাওনা ছিল, ২০১৬ সালের জুন নাগাদ ভ্যালুয়েশন করে তা ছয়শো কোটি ৯২ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাকিস্তান এ টাকা দাবি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, ৪৭-এর দেশ বিভাগের আগের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে দিল্লির কাছ থেকে তারা ছয় বিলিয়ন ভারতীয় রূপি নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, গোল্ড রিজার্ভ, স্টালিং সিকিউরিটিজ, ইন্ডিয়ান সিকিউরিটিজ, রুপি কয়েন এবং দেশভাগের সময় ভারতের মুদ্রায় পাকিস্তানের শেয়ার। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের দাবি, মুদ্রা ছাপানোর জন্য পাকিস্তান ভারতকে দেনা পরিশোধ করে। কিন্তু ভারত সাত দশকেও তা করেনি। এ খাতে ভারতের দেনা ধরা হয়েছে ৪০ মিলিয়ন রুপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান এরই মধ্যে সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে জানতে চেয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে ঠিক কত টাকা পাওনা রয়েছে। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধানদের কাছে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান একটি সার্কুলার পাঠিয়েছে। এ সার্কুলারে তাদের কাছে বাংলাদেশ-ভারতের দেনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ জানতে চাওয়া হয়।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: তাহের