
ঢাকা: সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াকে হত্যার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় কারাবন্দি ও বরখাস্তকৃত সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরে এই তথ্য জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড.মো.বশিরউল্লাহ।
মেয়র আরিফুলের করা জামিন আবেদন শুনানি করে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো.আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রোববার রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড.মো.বশিরউল্লাহ। অপরদিকে আরিফুলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
ড.মো.বশিরউল্লাহ জানান, তার জামিন মঞ্জুর করা হলেও হাইকোর্টের এ জামিনাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে রাষ্ট্রপক্ষ।
তিনি জানান, বিস্ফোরক আইনে করা এক মামলায় জামিন আবেদন করেছিলেন আরিফুল হক। ওই আবেদন শুনানি করে আদালত ওনার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন। এই জামিন নিয়ে আপিল আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত তিনি জামিনে থাকবেন। বর্তমানে মামলাটি সিলেটের দ্রুত বিচার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যেরবাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার দিন মধ্যরাতের পর হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান দুটি মামলা করেন। একটি হত্যা ও অপরটি বিস্ফোরক আইনে মোট দু’টি মামলা দায়ের করেন তিনি।
জানা গেছে, হত্যা মামলায়ও তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছন। প্রথমে সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগের আসামিদেরও এতে রাখা হয়। কিন্তু ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া অভিযোগপত্রের ওপর হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে নারাজি আবেদন করেন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নারাজি আবেদন গ্রহণ করে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ আদেশের প্রেক্ষিতে সিআইডি’র এএসপি মেহেরুন নেছা ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে কিবরিয়া হত্যা মামলার সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। নতুন আসামিদের নিয়ে এ মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে।
এরপর ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই ১১ জনকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেনে আদালত। এ পরোয়ানা জারির পর একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আরিফুল হক চৌধুরী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর মধ্যে মাকে দেখতে একবার তিনি ১৫ দিনের জন্য জামিন পেয়েছিলেন।
প্রতিবেদন: ফজলুল হক, সম্পাদনা: মাহতাব শফি