
ঢাকা: বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ক্যাম্পের বাইরে বসবাসরত উর্দুভাষী অবাঙালি বিহারীদের উচ্ছেদ সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর দেওয়া স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়িছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে দুই দফায় এই স্থিতাবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি করেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার(এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ ও হাফিজুর রহমান খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।
গত ২৯ মার্চ হাইকোর্ট এক রায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ক্যাম্পের বাইরে বসবাসরত উর্দুভাষী অবাঙালিদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। তবে ক্যাম্পে বসবাসরতদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করার সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন আদালত। হাইকোর্টের এই রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা চেয়ে দুটি আবেদন দায়ের করে রিটকারী পক্ষ।
আপিলের আবেদনে বলা হয়, হাইকোর্টের রায়ে পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনো প্রকাশ পায়নি। রায় পেলে লিভ টু আপিল দায়ের করা হবে। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ ও হাফিজুর রহমান খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।
হাফিজুর রহমান খান বলেন, আপিল বিভাগ পল্লবী ক্যাম্পে অবস্থানের ওপর উভয় পক্ষে (সরকারপক্ষ ও আবেদনকারী) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে পল্লবী বিহারি ক্যাম্পে বসবাসরত অবাঙালিদের উচ্ছেদ করা যাবে না।
জানা যায়, ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষী অবাঙালিদের উচ্ছেদের আশংকা থেকে ২০০২ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন উর্দু স্পিকিং পিপলস ইউথ রিহাবিলিটেশন মুভমেন্ট (ইউএসপিওয়াইআরএম) এর সভাপতি মো. সাদাকাত খান ও শহিদ আলী বাবলু।
আবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে অমানবিক জীবনযাপন করে আসছেন প্রায় ৪ লাখ উর্দুভাষী বিহারী। ১৯৯৫ সাল থেকে এসব উর্দুভাষীকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন মিরপুরের পল্লবীতে প্রায় ৩৯টি ছোট-বড় ক্যাম্প বিনা নোটিশে উচ্ছেদের কার্যক্রম গ্রহণ করে।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। তখন হাইকোর্ট ক্যাম্পে বসবাসরতদের পুনর্বাসন বা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্ছেদ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। পরবর্তীকালে ক্যাম্পে বসবাসরতদের উচ্ছেদ নিয়ে আরো ৮টি রিট দায়ের করা হয়। এসব রিট মামলার রুলের ওপর একত্রে হাইকোর্টে শুনানি করে গত ২৯ মার্চ আদালত ৯টি রিটের ওপর জারিকৃত রুল কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে খারিজ করে দেন।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এফএইচ/এমএস/এসআই