
বরিশাল: সরকারি কোন অনুমোদন ছাড়াই বিএম কলেজ ক্যাম্পাসের শোভাবর্ধনকারী ১২/১৩ টি মেহেগনি, আকাশমনি (ইউক্যালিপটাস) সহ বিভিন্ন গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ প্রফেসর স.ম ইমানুল হাকিম এর বিরুদ্ধে।
গাছ কাটার চিত্র ক্যামেরা বন্ধি করার চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে থাকা বিএম কলেজ অধ্যক্ষ সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দেন। জানা গেছে, বনবিভাগ কিংবা কোন টেন্ডার কার্যক্রম ছাড়াই শুক্রবার কলেজ বন্ধের দিনে জুম’আ’র নামাজের পর পরই শ্রমিকদের মাধ্যমে বড় আকারের ঐ গাছগুলো কাটা শুরু করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সাংবাদিকরা শনিবার বিএম কলেজে গিয়ে দেখেন ক্যাম্পাসের জিরোপয়েন্ট এলাকায় বহু বছরের পুরানো বড় আকৃতির ১০/১২টি মেহেগনি ও আকাশমনি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, অধ্যক্ষ স্যার আমাদের কাটতে বলছে, আমরা টাকার বিনিময়ে গাছগুলো কেটেছি। তিনি গাছ কি করবেন তা আমাদের জানা নেই।
এদিকে গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ছুটে আসার পর ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন গাছ-কাটার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেল্লাল হোসেন। তার চলে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর স.ম ইমানুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘আমার ক্যাম্পাসের গাছ আমি কেটেছি। এটা নিউজ হওয়ার কিছু নয়।’
এসময় তিনি সাংবাদিকদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘পত্রিকার সম্পাদকের সাথে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলে নেবেন। এছাড়া ক্যাম্পাসের উন্নয়নের স্বার্থে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার পাশাপাশি ভবনের ক্ষতি করায় বহু বছরের পুরানো ঐসব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।’
বিএম কলেজের সূত্র জানিয়েছে, অধ্যক্ষ স.ম ইমানুল হাকিম বন বিভাগ কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি-ছাড়পত্র ছাড়াই শুক্রবার কলেজ বন্ধের দিন হওয়ায় বাধা দেয়ার কেউ থাকবে না বলে নিজ উদ্যোগে ও নিজস্ব প্রয়োজনেই গাছ গুলো কাটা শুরু করেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিএম কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক স.ম ইমানুল হাকিম বলেন, ‘এটা বড় কোন বিষয় নয়। তাছাড়া গাছ গুলো ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে। তাই এগুলো কেটে পরিবেশের ভারসম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র।’
বন সংরক্ষন অধিদপ্তর বরিশাল কোস্টাল অঞ্চলের কর্মকর্তা আবু নাসের খান বলেন, ‘সরকারি সম্পত্তির কোন গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে টেন্ডারের মাধ্যমে কাটতে হবে। এমনকি গাছের ডালও একটি নির্দিষ্ট আকারের পরে তা কাটতে হলে সে ক্ষেত্রেও বন বিভাগের ছাড়পত্র নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সেটা আইন পরিপন্থি বলে বিবেচিত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএম কলেজের গাছ কাটার বিষয়ে তারা শুক্রবার পর্যন্ত কোন চিঠি পাননি এমনকি সেখানে গাছ কাটার জন্য কাউকে অনুমতিও দেয়া হয়নি। তাই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’
প্রতিবেদন: প্রতিনিধি, সম্পাদনা: ইয়াসিন