
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশ আজ যোজন দূরে দাঁড়িয়ে আছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেই প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। মানবচেতনার উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্নয়নকে টেকসই করতে হবে।”
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ৩৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ড. রহমান আরো বলেন, “সমাজে যে গলদ দেখা দিয়েছে তাকে অবজ্ঞা করার বা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার আজ আর কোন অবকাশ নেই। তার অবসানে সরকার, রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।”
মুক্তিযুদ্ধকালে খুলনার চুকনগরসহ সারাদেশের নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় গোষ্ঠির বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ও তাদের দোসরদের সংঘটিত গণহত্যার কথা উল্লেখ করে ড. রহমান বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে এ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে মুক্তিযুদ্ধপ্রেমী সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।”
প্রধান আলোচক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, “সরকারকে সহায়তা দান এবং একই সাথে সতর্ক করার জন্যে দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা যারা নানানভাবে পরামর্শ দেন তাদের প্রতি রাজনীতিকদের একাংশের অবজ্ঞা ও উপেক্ষা তাদের হতাশ করে।”
তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে এক কোটি ২০ লক্ষ বাঙ্গালীর শরণার্থী জীবনের দুঃসহ পরিস্থিতি, আত্মোৎসর্গকারী এমনকি মুজিবনগর সরকারের নেতারাও আজ উপক্ষোর শিকার। পাঠ্যপুস্তক হেফাজতের দখলে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকে হত্যা করা যাবেনা। ক্ষুদে পাকিস্তান মেনে নেবো না।”
বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, “সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন প্রতিদিনের ঘটনা। চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটিও বাংলাদেশে নেই।”
“বড় পাকিস্তান ভেঙ্গে ছোট পাকিস্তান গড়ার জন্যে আমরা কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? আফগানিস্তান বাংলাদেশের দিকে শ্বাস ফেলছে। তাহলে কি বাংলাদেশ আফগানিস্তান হতে চলেছে। এ বাংলাদেশের জন্যে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি, বলেণ তিনি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী রেখা চৌধুরী বলেন, “রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে রেখে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন সম্ভব নয়। ৭২-র সংবিধানে ফিরে যাওয়া ছাড়া আজ আর কোন বিকল্প নেই।”