মন শান্ত করার ছোট ছোট উপায়

কাজের চাপ, জীবনযাত্রা ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনে মানসিক চাপ, উদ্বিগ্নতা সমানতালে বাড়ে। এত মানসিক চাপ নিয়ে জীবনের ধাপগুলো সুন্দরভাবে অতিক্রম করা যায় না। তাই মনের ওপর থেকে চাপ দূর করতে হবে। মন শান্ত করার ছোট ছোট উপায় রপ্ত করতে পারলে কঠিন মুহূর্তেও নিজের কাজগুলো গুছিয়ে করা সম্ভব।
- আমরা সব সময় যেভাবে শ্বাস নিই, মানসিক চাপের সময় একটু অন্যভাবে শ্বাস নিতে হবে, একেবারে সচেতনভাবে। নজর রাখুন এর ছন্দের দিকে। প্রথমে দ্রুত শ্বাস নিন। এরপর ধীরে ও গভীরভাবে। শ্বাস নেওয়ার সময় হাত থাকবে পেটের ওপর। শ্বাস নেওয়ার সময় হাত উঠবে, ছাড়ার সময় হাত নামবে।
- ঘরে অ্যাকুয়ারিয়াম থাকলে কিছুক্ষণ তার ভেতরের দিকে তাকিয়ে থাকুন। অস্থিরতা ধীরে ধীরে কমবে। এ ছাড়া পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটালেও অস্থিরতা কমে।
- মাত্র কয়েক মিনিটের অ্যারোবিকস ব্যায়াম করুন। কিছুক্ষণ হেঁটেও আসতে পারেন। এতে এন্ডরফিন হরমোন নিঃসৃত হবে। ফিল গুড কেমিক্যাল মন ভালো করে তোলে। তবে ভারোত্তোলনসহ কঠোর ব্যায়াম করলে মাঝে মাঝে বিরতি দিতে হবে। অন্যদিকে ব্যায়ামের আগে ওয়ার্মআপ করে নিতে হবে।
- গান শুনলে মস্তিষ্ক শান্ত হয়। কিছু নিউরন আঘাত করে এমিগডালায়। মগজের এই অংশ ভয় পেলে উদ্দীপ্ত হয়। গান শুনলে নেতিবাচক সিগন্যালগুলো মগজের অন্য অংশে কম পৌঁছায়।
- মানুষকে বিপদে সাহায্য করুন। এতে মস্তিষ্কের আনন্দ-অনুভূতির অংশটি উদ্দীপ্ত হবে। কারও উপকারে এগিয়ে এলে এন্ডরফিন হরমোন বেশি উৎসারিত হয়।
- সবুজের কাছাকাছি থাকুন। পার্কে সময় কাটান ৩০ মিনিট। এতে মনোযোগ বাড়বে, রক্তচাপ কমবে। স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ কমবে।
- শরীরের সঙ্গে যুক্ত হন মন শান্ত করার জন্য। যেমন পা, পায়ের পাতা, চোখ ও মুখ টান টান রাখুন ১২ সেকেন্ড। এরপর রিলাক্স করুন। শরীরের অন্য অংশে করুন। এতে ভালো ঘুম হবে।
- মাঝে মাঝে কল্প স্বর্গও মানসিক অস্থিরতা কমাতে সহায়তা করে। ভাবুন সুন্দর চিত্রকল্পের কথা, সূর্যাস্তের সময় সমুদ্র তীরে বসে আছেন বা বসে আছেন মিষ্টি রোদে বারান্দায়; ভাবুন এমন ছবি। একটু বিশদ ভাবুন, গন্ধ পান ফুলের? দেখছেন সাগরের ঢেউ, বালুকা বেলায় নুড়ি, শুনুন কল কল শব্দ। মন ভালো হয়ে যাবে।
- ছবি আঁকা, রং করা, সূচিকর্ম ইত্যাদি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। নতুন কিছু শিখুন। সময় ভালো কাটবে আবার মানসিক চাপও কমবে।
- বাগানে সময় কাটান। গাছ ও মাটির সঙ্গে সময় কাটালে মন ভালো হয়
অধ্যাপক ডা. শুভাগত ,সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল