
পঞ্চগড়: মসজিদ নির্মাণের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা তুলছেন মুসল্লিরা। সরকারি বে-সরকারি সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় এভাবেই চাঁদা তুলে মসজিদের নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করছেন তারা।
রোববার সরেজমিনে জেলা সদরের শিংপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় প্রায় অর্ধশত মুসল্লি মহাসড়কে দাঁড়িয়ে চাঁদা আদায় করছেন নিজেদের মসজিদের সংস্কার কাজের জন্য। প্রত্যেকে সেচ্ছাশ্রমে পশ্চিম শিংপাড়া বাইতুন নুর জামে মসজিদের জন্য পথচারীদের কাছে চাঁদা উত্তোলন করছেন। মুসল্লিদের এই দলে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ রয়েছেন।
পবিত্র রমজান মাসে প্রত্যেকে রোজা রেখে প্রখর রৌদ্রে দাঁড়িয়ে কাজ করে চলেছেন। লক্ষ্য একটাই মসজিদের সংস্কার কাজ। তাই মোটর গাড়ি, বাস, মিনিবাস, অটোবাইক, রিক্সা, ভ্যান ও পথচারীদের কাছে মসজিদের সংস্কার কাজের জন্য সহযোগিতার আহ্বান করছেন। সম্প্রতি এই দৃশ্য পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে। মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসল্লিদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা উত্তোলন করতে হচ্ছে। মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় সরকারি বা বে-সরকারিভাবে তেমন সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের রাস্তায় নামাতে হয়েছে।
সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে কখনো দু’এক টন টিয়ার ও কাবিখা বরাদ্দ পেলেও তাও পর্যাপ্ত নয়। কোথাও কোথাও কুয়েতসহ বিদেশি সংস্থার সাহায্যে মসজিদ নির্মাণ করা হলেও পঞ্চগড়ের গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মসজিদই কাঁচা ও আধাকাঁচা টিনশেড দিয়ে তৈরি। মুসলমান ধর্মের পবিত্র এই স্থানটিকে মুসল্লিরা চায় সুন্দর ও সর্বোচ্চ অবকাঠামোগত রূপ দিতে। কিন্তু সর্ব উত্তরের এ জেলার অধিকাংশ বাসিন্দাই দরিদ্র। তাই মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কারের ব্যয়ভার তারা বহন করতে পারে না। এজন্যই তাদের রাস্তায় নেমে মানুষের সহযোগিতায় ধর্মীয় আরাধনার স্থানটি সংস্কার করতে হয়। কিন্তু এভাবে চাঁদা আদায়ে যেমন ঝুঁকি আছে তেমনি বিষয়টিকে অনেক পথচারীরা বিরক্তিকর মনে করেন।
শিংপাড়া বাইতুন নুর জামে মসজিদের মুসল্লি মাসুদুর রহমান জানান, সরকার যদি মসজিদ নির্মাণের জন্য আলাদা ফান্ড তৈরি করে তাহলে আমাদের আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা তুলতে হবে না।
পঞ্চগড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পঞ্চগড়ের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তাদের পক্ষে মসজিদ নির্মাণের সমস্ত ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। সরকার যদি মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কার কাজে সহায়তা করতে এগিয়ে আসলে দরিদ্র এ জনগোষ্ঠীর মুসলমানরা অনেক উপকৃত হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা মুনতাজেরী দীনা জানান, মসজিদ নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ফান্ড নেই। তবে স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা টিআর ও কাবিখার মতো কর্মসূচির মাধ্যমে মসজিদ সংস্কারে সহযোগিতা করে থাকে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/প্রতিনিধি/এসজি/জাই