
বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা ;
জানুয়ারি ১০, ২০১৮ ঘটনাস্থল ঢাকা। ফ্লাইটযোগে মাওলানা সাদের বাংলাদেশে আগমনের খবরে বিমানবন্দর থেকে ইজতেমা মাঠে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে তাবলিগের একাংশের কর্মীরা।
ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাওলানা সাদ বিমানবন্দরে পৌঁছালেও তাকে ইজতেমার মাঠে যেতে দেওয়া হয়নি। বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে পুলিশি পাহারায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো কাকরাইলে।
মাওলানা সাদের ‘আপত্তিকর বয়ান’ নিয়ে পৃথিবী জুড়েই আছে নিন্দা। বিশ্ব আলেমদের অনেকেই তাকে প্রকাশ্যে তওবা করতে বলেন। একই দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশি আলেমরা তাকে বিশ্ব ইজতেমায় আসতে ও বয়ান করতে নিষেধ করেন।
যেসব বয়ানের জন্য বিতর্কিত মাওলানা সাদ, তার দেয়া বিতর্কিত বয়ানের কিছু অংশ; ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকা, ভোটের সময় চিহ্ন হিসাবে (আঙুলে) যে রং লাগানো হয়, তার কারণে নামাজ হয় না। তাই ভোট না দেয়া উচিত।
কুরআন শরীফের ভুল ব্যাখ্যা, বিভিন্ন আয়াতে তিনি বলেন, মুফাসসিরিন এই আয়াতের কোনো এক তাফসির করেছেন, ওলামা কোনো এক তাফসির করে থাকেন, কিন্তু আমি এই তাফসির করে থাকি। এটা শুনো। এটাই সঠিক তাফসির!
ইসলাম ও ওলামাদের বিরোধীতা, ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখা হারাম এবং পকেটে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রেখে নামাজ হয় না। যে আলেমগণ ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখাকে ‘জায়েজ’ বলেন, তারা ‘ওলামায়ে ছু’। বার বার কসম খেয়ে তিনি বলেন, তারা হলো ‘ওলামায়ে ছু’। এমন আলেমরা হলো গাধা! গাধা! গাধা!
মাওলানা সাদ কান্ধলভি হজরত ইলিয়াস (রহ.)-এর বংশধর। তার পিতা হজরত মাওলানা হারুন কান্ধলভি (রহ.) ছিলেন হজরত ইউসুফ (রহ.)-এর একমাত্র ছেলে। আর ইউসুফ (রহ.) ছিলেন হজরত ইলিয়াস (রহ.)-এর ছেলে।
মাওলানা সাদ কান্ধলভি বংশপরম্পরায় ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এ জন্য তাদের সিদ্দিকিও বলা হয়।
তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইলিয়াস (রহ.)-এর নাতি মাওলানা সাদ। তার মৃত্যুর পর বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ (রহ.), মাওলানা ইনামুল হাসান (রহ.) ও মাওলানা জুবায়েরুল হাসান (রহ.)। এদের মধ্যে মাওলানা জুবায়েরুল হাসান একক নেতৃত্ব প্রথা বিলুপ্ত করে শুরাভিত্তিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।
কিন্তু মাওলানা জুবায়েরুল হাসানের ইন্তেকালের পর মাওলানা সাদ আমিরের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পেয়ে শুরাভিত্তিক প্রচলিত পদ্ধতি এড়িয়ে ফের একক নেতৃত্বে কাজ শুরু করেন তিনি।
মাওলানা সাদ কান্ধলভী ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক ১৩৮৫ হিজরিতে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশ্ব ইজতেমায় শুক্রবার আজ জুম্মার নামাজ পরিচালনা করবেন মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী।
প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশ নেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা, এবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিচ্ছেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।