Saturday, December 2nd, 2023
মাতারবাড়িতে ভিড়ল কয়লাবাহী জাহাজ
June 15th, 2023 at 11:56 am
মাতারবাড়িতে ভিড়ল কয়লাবাহী জাহাজ

জাফর আলম, কক্সবাজার :

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে দেড় মাসে কয়লাবাহী সববৃহৎ চারটি জাহাজ ভিড়েছে। জাহাজগুলো এনেছে আড়াই লাখ টন কয়লা। সর্বশেষ বুধবার (১৪ জুন) সকালে ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে ৬৪ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জেটিতে ভিড়ে দেশের ইতিহাসে পঞ্চম বড় জাহাজটি।পানামার পতাকাবাহী ‘এমভি জিসিএল পারাডিপ’ নামের জাহাজটি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা জেটিতে ভিড়ে।

জাহাজটি লম্বায় ২২৯ দশমিক ৯৯ মিটার ও সাড়ে ১২ মিটার ড্রাফটের। এরপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে জাহাজ থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে কয়লা খালাস করা হবে। কয়লা খালাসে সময় লাগবে চারদিন।এ ব্যাপারে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই জেটিতে ১১৬টি জাহাজ ভিড়লেও সেগুলোতে ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উপকরণ। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল কয়লা নিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে চারটি জাহাজ। সব মিলিয়ে জাহাজ ভিড়েছে ১২০টি।আবুল কালাম আজাদ বলেন, এরই মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হবে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।এর আগে ২৫ এপ্রিল দেশের নৌবাণিজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ প্রবেশ করে মাতারবাড়িতে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ২২৯ মিটার দীর্ঘ ও ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের গভীরতা) পানামার পতাকাবাহী এমভি ‘অউসো মারো’মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙরে আসে।পরদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজটি বিশেষ নজরদারির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে আনা হয়। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ। একই সঙ্গে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রথম কয়লা নিয়ে আসা জাহাজ।

জাহাজটি সফলভাবে কয়লা খালাস করে গত ৭ মে সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে মাতারবাড়ি ত্যাগ করে। এরপর ১৯ মে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ২২৯ মিটার লম্বা ও ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের আরো একটি জাহাজ মাতারবাড়ি বন্দরে নোঙর করে। ওই মাসে আরও তিনটি জাহাজ কয়লা নিয়ে ভিড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জেটিতে। এবং গতকাল ৬৪ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ভিড়ে পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি।এ ব্যাপারে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম সিদ্দিকী বলেন, বুধবার সকালে কয়লাবাহী জাহাজটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা জেটিতে ভিড়েছে। এটা কয়লা নিয়ে ভেড়া চতুর্থ বড় জাহাজ। তবে এর চেয়ে বড় কোনো জাহাজ এখনো ভিড়েনি। শুরুতে ২৫ এপ্রিল বড় একটি জাহাজ আসে। এরপর মে মাসে আরও চারটি জাহাজ কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ি আসে। মহেশখালীর মাতারবাড়িতে তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে গভীর কৃত্রিম নৌপথ। একের পর এক জাহাজ ভেড়ানোর মাধ্যমে এই নৌপথের সুবিধা পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। উৎপাদনে যাওয়ার আগে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি জেটির একটিতে কয়লা খালাস করা হয়।

৩০০ মিটার লম্বা এ জেটিতেই বড় জাহাজগুলো ভিড়ছে। কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্য জেটিটি ১১০ মিটারের। এটি তেল খালাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।বিশ্লেষকদের মতে, গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে মাতারবাড়ি হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক হাব। ভিড়বে মাদার ভেসেল। বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের মাধ্যমে বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি। এরই মধ্যে মাতারবাড়ি বন্দর ঘিরে ২০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।এদিকে এই বন্দরে সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘এমভি অউসো মারো’ জাহাজ ভিড়িয়ে গভীর সমুদ্র বন্দরের অনুমোদন পেয়েছে মাতারবাড়ি বন্দর।স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণামতে নির্দিষ্ট সময়ে কয়লা নিয়ে জাহাজ এসেছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্রবন্দর পুরোদমে চালু হলে দেশের অর্থনীতিসহ পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে অনুমোদন পাওয়া ‘মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিকিটক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। সংশোধন করে প্রকল্পের ব্যয় ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়াল ৫১,৮৫৪.৮৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে আগে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) দেওয়ার কথা ছিল ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। সেই ঋণ বাড়িয়ে জাইকা মোট দিচ্ছে প্রায় ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা।

প্রকল্পটিতে সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। মাতারবাডি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের ১৪১৪ একর জমিতে এই বিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৪ হতে জুন ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরেই মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ

আরও খবর

সকল থানার ওসিকে বদলির নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের

সকল থানার ওসিকে বদলির নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের


শান্তর সেঞ্চুরিতে ভালো শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

শান্তর সেঞ্চুরিতে ভালো শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ


স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এ. কে. আজাদ

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এ. কে. আজাদ


বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগসহ ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগসহ ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল


ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুভ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুভ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন


কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক হয়রানির অভিযোগে ফটোগ্রাফারের কারাদণ্ড

কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক হয়রানির অভিযোগে ফটোগ্রাফারের কারাদণ্ড


কক্সবাজার ও ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল আগামীকাল থেকে

কক্সবাজার ও ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল আগামীকাল থেকে


নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন  শাহজাহান ওমর

নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শাহজাহান ওমর


ইসি’র সঙ্গে ইইউ’র বৈঠক আজ

ইসি’র সঙ্গে ইইউ’র বৈঠক আজ


আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকা বিজয়ী হবে : পানি সম্পদ উপমন্ত্রী

আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকা বিজয়ী হবে : পানি সম্পদ উপমন্ত্রী