
বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা: রাজধানীর খিলগাঁও এর গোড়ানে একটি বাড়িতে এক নারী তার দুই শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
শনিবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাড়ি থেকে আলফি ও জান্নাতুল নামে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাদের মা আখতারুন্নেসা পপিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পপির মা হেলেনা জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। ১৩ বছর আগে পপির বিয়ে হয়। তার স্বামী মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের বাজারে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করেন। বিয়ের পর থেকে পপি গোড়ানে তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতো। পরে সেখানেই বাসা ভাড়া নেয় বিপ্লব। তাদের দুই মেয়ে আলফি ও জান্নাতুল। তারা দু’জনেই ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়তো। আলফি চতুর্থ শ্রেণিতে ও জান্নাতুল প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
হেলেনা অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে বিপ্লব শ্বশুর আবু তালেবকে ফোন দিয়ে দোকানে মাল তোলার জন্য ১০ লাখ টাকা চায়। টাকা না দিলে দুই মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে বলে, ‘আমি আমার দুই মেয়েকে নিয়ে যাব, আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে যাবেন।’
স্বামীর নির্যাতনের কারণে পপিই তার দুই মেয়েকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে- দাবি করে তিনি বলেন, যেহেতু স্বামী দুই মেয়েকে নিয়ে যেতে চেয়েছে, তাই সে তার মেয়েদের হত্যা করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনার জন্য তার স্বামীই দায়ী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মা তার দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেছে। সিআইডির ক্রাইমসিন ঘটনাস্থল থেকে আলামত উদ্ধার করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর বিবাদের জেরে দুই সন্তানকে হত্যার পর মা আখতারুন্নেসা পপি আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন ধরেই পুলিশের তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।