
পাবনা: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার সন্দেহভাজন পরিকল্পনাকারী মারজানের বাবা নিজাম উদ্দিনকে ডিবি পরিচয়ে আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।
মারজানের চাচা রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান সোমবার রাত ৯টার দিকে ডিবি পরিচয়ে নিজাম উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর কবীর নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, জেলা পুলিশ বা ডিবি কেউই মারজানের বাবাকে আটক করেনি।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থা আছে, কারা আসলে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, আমাদেরও জানা নেই।’
এর আগে সন্ধ্যায় মারজানের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়। তার পুরো নাম নুরুল ইসলাম মারজান (২৩)। বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামে।
তখন পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর কবীর নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে জানান, মারজানের বাবার নাম নিজাম উদ্দিন। মা সালমা খাতুন। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ছাত্র ছিল।
এসপি আলমগীর বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে পরিবারের সাথে মারজানের যোগাযোগ নেই। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
মারজানের বাবা হোসিয়ারি শ্রমিক নিজাম উদ্দিন জানান, সে ২০১৪ সালে পাবনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে আলিম পাস করে।এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে ভর্তি হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে বাড়ি এসে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। এরপর দীর্ঘ আটমাস কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘মারজান যে এ ধরণের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তা আমাদের জানা ছিলনা। পত্রিকায় তার ছবি ছাপার পরই এ বিষয়ে জানতে পেরেছি।’
নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে কোন অপরাধ করলে তার যা শাস্তি হওয়া উচিত তাই হবে। তবে তাকে যারা জঙ্গি বানিয়েছে আমি তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের তালিকায় মারজানের নাম পাওয়া যায়নি। গত ৪ আগস্ট ছয়জন শিক্ষার্থীর নিখোঁজ তালিকা হাটহাজারী থানায় জমা দেয়া হয়। পরে অবশ্য ওই ছয় শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণমাধ্যমে আমি মারজানের বিষয়ে জানতে পেরেছি। মঙ্গলবার আমার ঢাকায় যাওয়ার শিডিউল ছিল, আমি তা বাতিল করেছি। সকালে ক্যাম্পাসে গিয়েই আমি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেবো।’
গত ১২ আগস্ট পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশানে হামলার পর সেখান থেকে জঙ্গিরা মারজানের কাছে ছবি ও তথ্য পাঠিয়েছে। তার সাংগঠনিক নাম মারজান। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং তিনি ঢাকাতেই রয়েছেন। তার একটি ছবি পাওয়া গেছে, সেই ছবি নিয়ে তদন্ত চলছে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস