
স্পোর্টস রিপোর্টার: দ্রুততম মানবীর খেতাবটা অক্ষুন্ন রাখলেন নৌ-বাহিনীর স্প্রিন্টার শিরিন আক্তার। আজ ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডের লড়াইয়ে ১২.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণটা নিজের করে রাখলেন তিনি। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো সেরার মুকুট নিজের মাথায় তুললেন নৌ-বাহিনীর এ অ্যথলেট। শিরিনের চেয়ে .১৯ সেকেন্ড সময় বেশি নেয়ায় রৌপ্য পদক নিয়েই সন্তুষ্ঠ থাকতে হয়েছে সোহাগীকে। আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্ষা খাতুন ১২.৩৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছেন।
৪০তম জাতীয় এই অ্যথলেটিক প্রতিযোগিতার আগেও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন শিরিন। কারণ পরীক্ষার জন্য ঠিক মতো অনুশীলনও করতে পারেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী এ বছর পরীক্ষাও দিচ্ছেন। পরীক্ষার কারনে অনুশীলন মাঠে নামতে হতো বিকেল তিনটায়। ঠিকমতো অনুশীলন করতে না পারায় প্রতিনিয়ত পিড়া দিয়েছে তাকে। সেরার মুকুট ধরে রাখতে অনেক কষ্ট করেছেন শিরিন। তাই ফিনিশিং লাইন টাচ করার পরই আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। সতীর্থ ও সংস্থার অফিসিয়ালরা ছুঁটে ট্র্যাকে চলে আসেন শিরিনকে অভিনন্দন জানাতে। অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরন করেন নৌ-বাহিনীর এ স্প্রিন্টার।
অভিনন্দনে সিক্ত শিরিন কান্না থামিয়ে বলেন, ‘এবার আমি পরীক্ষার জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। ভেবেছিলাম শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারবো না। আর আমার সংস্থারই আরেক স্প্রিন্টার সোহাগীই ছিল আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি। তাকে অনেক বড় প্রতিদ্বন্দ্বি মনে হয়েছিল। তাই বেশ জোড়েই দৌড়েছিলাম। পড়ে দেখলাম আসলে আমিই চ্যাম্পিয়ন। তাই আনন্দে কান্না এসেছিল। এবার এই খেতাব ধরে রাখতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এ জন্য আমি আমার সংস্থা নৌ-বাহিনী ও কাফী স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।’
ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করার পর তখনো সময়টা হয়তো জানেনা শিরিন। তবে টাইমিংয়ের যে উন্নতি হয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আর অলিম্পিকের পর টাইমিংয়ে উন্নতি করাটাই তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জে নিজেকে জয়ী মনে করছেন শিরিন, ‘আমার মনে হয় টাইমিংয়ে উন্নতি হয়েছে। এটাই আমার চাওয়া ছিল। আর অলিম্পিক গেমসে খেলাতেই টাইমিংয়ে উন্নতি করাটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সে চ্যালেঞ্জে আমি ভালোভাবেই জয়ী হয়েছি।’
এবারের আসরের দ্রুততম মানব ও মানবী খেতাব দু’টিই গেছে নৌ-বাহিনীর ঘরে। আগের দিন দ্রুততম মানবের খেতাব অর্জন করেছেন মেজবাহ। আর আজ জিতলেন শিরিন আক্তার। মেজবাহ দ্রুততম মানবের খেতাব অর্জন করলেন পাঁচবার। অন্যদিকে শিরিন চারবার। অলিম্পিক খেলে আসা শিরিনের লক্ষ্যই ছিল মুকুট ধরে রাখা। সেটাই হয়েছে।
প্রতিবেদক: কবির, সম্পাদনা: ইয়াসিন