
ঢাকা: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় হাইকোর্টের মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের বিরুদ্ধে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ পাঁচজনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য থাকলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিলিরুজ্জামান শুনানিতে অংশ নেন। তবে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিলিরুজ্জামান জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপিলের শুনানি হবে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির দণ্ডাদেশ ও দুজনকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মুফতি আবদুল হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ও দেলোয়ার হোসেন। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মুফতি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ও মুফতি মঈন উদ্দিন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ, মোহাম্মদ আলী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা করা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসকসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। প্রায় সাত বছর পর গত ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। পরে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি এ রায় ঘোষণা করা হয়। গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন আসামিপক্ষ।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: মাহতাব শফি