
ঢাকা: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত ৮টি টেস্টে তেমন প্রতিরোধ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। এবারই প্রথম দারুণ প্রতিরোধ গড়ে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল টাইগাররা। নবম টেস্টে এসে সফরকারীদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত ‘হারের বৃত্তে’ই বন্দি থাকতে হয়েছে স্বাগতিকদের। ২২ রানের হার নিয়ে আজ সোমবার সকালে মাঠ ত্যাগ করে লাল-সবুজরা। জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে না পারায় আফসোসের অনলে পুড়ছেন বাংলাদেশী অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিন জয় থেকে মাত্র ৩৩ রান দূরে ছিল স্বাগতিকরা। হাতে ছিল দুই উইকেট। কিন্তু এ রান করতে গিয়েই শেষ দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে হাতুরুসিংহের শিষ্যরা। স্টোকসের করা ১২তম ওভারেই পতন ঘটে দুই উইকেটের। প্রথম বলে তাইজুলকে আর তৃতীয় বলে শফিউলকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন তিনি। শফিউলের আউটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ চেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু সেটি আর কাজে দেয়নি। ফলাফলটা ইংল্যান্ডের পক্ষেই গেছে। এটা নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে ২৬টি রিভিউ হয়েছে। যার বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই গেছে ইংল্যান্ডের পক্ষে। তাই রিভিউ নিয়ে আফসোস রয়ে গেছে মুশফিকের।
মুশফিক বলেন, ‘রিভিউর ফল হওয়ার পর এটা বিবেচনা করাটা কঠিন। এমনও হতে পারত, আজকে সিদ্ধান্ত দুইটি আমাদের পক্ষেও আসতে পারতো। আমরা কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেটা আমাদের পক্ষে গেছে। অনেক সময় তারা আউট দেয়নি, এটা হতেই পারে। এমন কিছু সিদ্ধান্ত হবে। ভবিষ্যতে আমরা চেষ্টা করব, সেরা কাজগুলোই করতে। যেন আমাদের পক্ষে থাকে।’
দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২৮৬ রান। মাঠে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। ১৪০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে নিজেদের লক্ষ্য থেকে এক প্রকার ছিঁটকেই গিয়েছিল লাল-সবুজরা। কিন্তু ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে মুশফিক ও সাব্বির রহমান ৮৭ রানের দারুন এক পার্টনারশীপ উপহার দিয়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন। জয়টা তখনও খুব একটা কঠিন ছিল না টাইগারদের জন্য। কিন্তু মাত্র ১১ রানের মধ্যে আরও দু’টি উইকেট পতন ঘটলে রঙ্গীন স্বপ্নটা ফিঁকে করে দেন মিরাজ ও রাব্বি। তারপরও উইকেটে থাকা সাব্বিরের ব্যাটেই ভরসা ছিল। কিন্তু আজ সকালে সেটা আর সম্ভব হয়নি। সাব্বির অবিচল থাকলেও তাইজুল আর শফিউল ব্যাট ধরে রাখতে পারেননি।
আর সফরকারীদের হয়ে প্রথম ইনিংসে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে বড় একটা পার্টনারশীপ গড়েছিলেন স্টোকস ও জনি বেয়রস্টোর। ঐ ইনিংসটাই না কি জয়ের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, ‘আমার মনে হয় ওই রানটুকুই বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। প্রথম ইনিংসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। লিড নিতে না পারলেও আমরা যদি ২৯০ বা ২৮০ রানও করতাম। ওরা দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪০ রান করেছে আমরা ২৬৩ রান করেছি। সেদিক থেকে বলব ওই রানটাই এই টেস্টে ম্যাটার করেছে।’
প্রথম ইনিংসে সাকিবের আউট হওয়াটা নিয়েও আফসোস আছে কাপ্তানের কণ্ঠে, ‘তার মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে আমরা কেউই এটা আশা করিনি। ও নিজেই জানে কাজটা ও ঠিক করে নাই। দলে সে যত প্রভাব ফেলবে তা আমাদের দলের জন্য আরও ভালো হবে। সে নিজেও জানে।’
প্রতিবেদন: কবির, সম্পাদনা: তুসা