
ডেস্ক: কিশোরীদের পড়াশোনার পাশাপাশি মহিলাদের ঘরের কাজে মনোসংযোগ সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয় মোবাইল। তাই ‘নষ্টামি’ রুখতে গ্রামের অবিবাহিত সকল তরুণীর ক্ষেত্রেই মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ভারতের গুজরাটের মেহসানা-র সূর্য নামের এক গ্রামে সম্প্রতি গ্রামসভা এমনই নিয়ম জারি করে।
চলতি মাসের প্রথম দিকে ওই সভা বসেছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কারণে। পুরুষরা মদ খেয়ে এসে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর অত্যাচার করেন। দিন দিন তার সংখ্যা বাড়ছিল। আর গ্রামসভায় প্রতি দিন এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ছিল ভুরিভুরি। সেই সমস্যারই সমাধানে বসে গ্রামসভা।
কিন্তু, আলোচনা শুরু হওয়ার পরে তা মোড় নেয় অন্য পথে। পুরুষের অত্যাচার নিয়ে আলোচনা ঘুরে যায় মহিলাদের মোবাইল ব্যবহারের দিকে। তার পরে সেই ‘সমস্যা’ নিয়েই পর্যালোচনা হয়। তার পরেই গ্রামের প্রধান সভার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন।
পুরুষের মদ্যপানের মতো মহিলাদের মোবাইল ব্যবহারও খুব খারাপ একটি কাজ। এতে সমাজের ক্ষতি হয়। কিশোরীদের পড়াশোনার পাশাপাশি মহিলাদের ঘরের কাজে মনোসংযোগও সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয় মোবাইল। তাই গ্রামের অবিবাহিত সকল তরুণীর ক্ষেত্রেই মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গ্রাম প্রধান দেবশি ভানকর বলেন, ‘মোড়লদের মত মেনেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ স্কুলছাত্রদেরও জন্য খুব শিগগরিই এমন একটা নিয়ম আনা হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই চালু হয়েছে ওই নিয়ম। যদিও অবিবাহিত তরুণীরা তাদের বাবা-মা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের মোবাইল ব্যবহার করে কেবলমাত্র কথা বলতে পারবে। অন্য কোনো কাজে তা কোনো ভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। যদি কোনো অবিবাহিতা তরুণীকে মোবাইল হাতে দেখা যায়, তবে তাকে রীতিমতো ২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর যিনি এই খবরটা পৌঁছে দেবেন মোড়লদের কাছে, তাকে দেয়া হবে ২০০ টাকা বকশিস।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিতর্ক অন্য মাত্রাও পেয়েছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত নীতি ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’। গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিতে তত্পর হওয়ার কথাও বিভিন্ন সময়ে বলেন তিনি। আর এ রকম একটা সময়ে তার নিজ রাজ্য গুজরাটের একটি গ্রামে এমন নিয়ম তৈরি হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ঘটনাচক্রে যে মেহসানায় এমনটা হয়েছে, তারই এক মফস্বল শহর ভাডনগরেই জন্মেছিলেন নরেন্দ্র মোদি।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এমএইচ/জাই