
নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম. মোরশেদ খান, তার স্ত্রী ও ছেলেকে আত্মসর্পন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে মোরশেদ খান, স্ত্রী নাসরিন খান ও ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানকে সিনিয়র স্পেশাল জজ বিচারিক(নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিনের বিষয়টি আদালতকে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে এই মামলা দুদককে পুনঃতদন্ত করতেও অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হংকংয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংকে যে অ্যাকাউন্ট জব্দ ছিল তা ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত জব্দই থাকবে বলে রায় দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম জহিরুল হক ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল শহিদুল ইসলাম খান। অপরদিকে মোরশেদ খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার ৬ সপ্তাহের মধ্যে মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী-পুত্রকে ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তারা আত্মসমর্পণ করলে বিচারিক আদালতকে তাদের জামিনের বিষয়ে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই মামলা পূর্বে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দেওয়া হয়েছিল তার পরিবর্তে এখন দুদক নতুন করে তদন্ত করতে পারবে। একইসঙ্গে তাদের হংকংয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যেটা জব্দ ছিল তা ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত জব্দই থাকবে বলেও রায়ে বলা হয়েছে। যেই অ্যাকাউন্টে ১৬ মিলিয়ন হংকং ডলার রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে মোরশেদ খানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা পুনরায় তদন্ত চেয়ে দুদকের করা আবেদনের ওপর ১ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষ হয়। ওইদিনই রায়ের জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
জানা যায়, মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০১৩ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন মোরশেদ খান, তার স্ত্রী নাসরিন খান ও ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় ২০১৫ সালের জুলাই মাসে দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনায় কোনো মানি লন্ডারিং হয়নি। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন চলতি বছর ১৫ এপ্রিল বিচারিক আদালত গ্রহণ করলে মোরশেদ খান, নাসরিন খান ও ফয়সাল মোরশেদ খান অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।
তবে এই মামলা পুনঃতদন্তের জন্য বিচারিক আদালতের আবেদন করে দুদক। ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত গত ২ জুন দুটি আবেদনই খারিজ করে দেয়। নিম্ন আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেও তিনি পরে দেখতে পান, অভিযোগপত্র দেওয়ার উপাদান সেখানে ছিল। এ কারণে দুদক কর্তৃপক্ষ পরে পুনঃতদন্তের আবেদন জানায়। তিনজনের অ্যাকাউন্টে ১৬ মিলিয়ন হংকং ডলার আছে।
প্রতিবেদক: ফায়েজ, সম্পাদনা: প্রণব