
ওয়াশিংটন: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডো শহরে সমকামীদের একটি নাইট ক্লাবে গুলিবর্ষণের ঘটনায় সেদেশে নতুন করে ইসলাম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর ইরানী গণমাধ্যম রেডিও তেহরান’র অনলাইন সংস্করণ পার্স টুডে’র।
রোববারের ওই হামলার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কট্টর মুসলিম বিরোধী হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমেরিকার মাটিতে এ ধরণের সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে আগেই ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছিলো।’ তিনি ফের বিদেশে জন্মগ্রহণকারী মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘অরল্যান্ডোতে যা ঘটেছে তা শুরু মাত্র এবং আমি চাই বিদেশে জন্মগ্রহণকারী কোনো মুসলমান যেন আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে।’ একই সঙ্গে তিনি অরল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার জন্য উগ্র ইসলামপন্থীদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামার সমর্থনকে দায়ী করে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এদিকে ঘটনায় এক প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ‘মার্কিনীরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং তারা ভীত হবে না।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল।’
আমেরিকায় মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ দেখাশোনাকারী সর্ববৃহৎ সংস্থা মুসলিম-আমেরিকান সম্পর্ক বিষয়ক পরিষদের প্রধান নিহাদ আওয়াদ বলেছেন, ‘ওই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।’ তিনি বলেন, ‘উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসীরা সমাজে বিভেদ সৃষ্টির জন্যই এ ধরণের হামলা চালিয়ে থাকে। আমেরিকার মুসলমানরা উচ্চকণ্ঠে বলতে চায় তারা যে কোনো বিদ্বেষ, ঘৃণা থেকে মুক্ত এবং সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভীত নয়।’
দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অরল্যান্ডো শহরের ওই ক্লাবে গোলাগুলিতে ১০০ এ’র বেশি হতাহত হয়েছে। এটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গুলিবর্ষণের ঘটনা। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ ওই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এখনো এ বর্বর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো উগ্র গোষ্ঠীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তদন্তের সঙ্গে যুক্ত দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ ঘটনায় দায়েশ কিংবা অন্য কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে যে জড়িত সে দায়েশের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকতে পারে।’
কোনো কোনো সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দায়েশ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে ওই খুনির যোগাযোগের বিষয়ে আগে থেকেই অবহিত ছিল। এ সম্পর্কে এফবিআই’র কর্মকর্তা রোনাল্ড হুপার বলেছেন, ‘পুলিশ ওমর মাথিনকে ২০১৩ সাল থেকেই চিনত। এ পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেছেন, ওই ব্যক্তির সঙ্গে যখনই কথাবার্তা হয়েছে তখনই বোঝা গিয়েছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে।’
বলা হচ্ছে, নাইট ক্লাবে হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ক্লাবে প্রবেশের মাত্র কয়েক মিনিট আগে দায়েশের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের প্রতি আনুগত্যের কথা জানিয়েছিল। বলা হচ্ছে ওমর মাথিন নিরাপত্তা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করার সুবাদে বেশ কিছু আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র তার হাতে আসে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসকে