
ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় যে তিনতলা বাড়িতে পুলিশি অভিযান চলছে সে বাড়িটি ইমতিয়াজ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি ভাড়া নিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিয়ে ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরণ করেছিলেন।
শনিবার সূর্যভিলা নামের ওই তিনতলা বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী জামাল হোসেনের মেয়ে জোনাকি রাসেল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
জোনাকি জানান, সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখে ১০ হাজার টাকায় বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেন ইমতিয়াজ আহমেদ। ভাড়াটিয়া ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিও জমা দেন তিনি। বাসা ভাড়া নেয়ার সময় ইমতিয়াজ জানান তিনি অনলাইনে পণ্য ব্যবসায়ী, স্ত্রী ও নবজাতককে নিয়ে থাকবেন। মাঝে মাঝে তার বোন এবং বাসায় আসা যাওয়া করবে।
তিনি আরো জানান, সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখে ওই পরিবার বাসায় ওঠেন। তারা বাসা থেকে খুব কমই বের হতেন। জিজ্ঞেস করলে বলতেন ছোট বাচ্চাকে রেখে তারা বের হতে পারেন না। পরিবারটি খুবই শান্ত-শিষ্ট ছিল বলে কখনো সন্দেহ হয়নি। অধিকাংশ সময়ই ওই বাসা ভেতর থেকে বন্ধ থাকতো। তাদের পরিচয়পত্র পুলিশকে দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণখানের আশকোনার ওই বাসায় জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায় পুলিশ। পরে রাত দুইটার দিকে বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকালে ওই বাসা থেকে রূপনগরে নিহত জঙ্গি জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা ও তার মেয়ে এবং জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষা ও তার সন্তান আত্মসমপর্ণ করে। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আত্মসমর্পণকারীরা জানিয়েছেন পাঁচ মাস আগে সূর্যভিলা নামের ওই তিনতলা বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেয় জঙ্গি মুসা ও তার স্ত্রী। এ সময় মুসা নিজেকে চাকরিজীবী হিসেবে পরিচয় দেয়।
এদিকে আশকোনার সূর্যভিলা নামের ওই বাড়িতে এখনো তিনজন জঙ্গি অবস্থান করছে। তাদের একজন আজিমপুরে নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরীর ১৪ বছরের ছেলে। ওই কিশোর শরীরে গ্রেনেড বেঁধে পুলিশকে প্রতিরোধ করার হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াত ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বাড়িটি ঘিরে জঙ্গিদের গান পয়েন্টে রেখে আত্মসমর্পনের আহ্বান জানাচ্ছে।
প্রতিবেদন: প্রীতম সাহা, সম্পাদনা: জাবেদ