
ঢাকা: ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগের মামলায় আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এইউএসটি) শিক্ষক মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে প্রথম দিনই আদালতে কোনো সাক্ষী হাজির হয়নি।
ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সফিউল আজমের আদালতে মঙ্গলবার মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন আদালতে কোনো সাক্ষী হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করে। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। যৌন হয়রানির শিকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীসহ মোট ২৮ জন এ মামলার সাক্ষী।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০১৬ সালের ৪ মে রাতে কলাবাগান থানায় শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদৌল্লাহ আল সায়েম। ওই দিনই কলাবাগানের বাসা থেকে ফেরদৌসকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে আদালত তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে ফেরদৌস ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে বরখাস্ত করে। ফেরদৌস বর্তমানে কারাগারে আছেন।
পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরীন কলি এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে তদন্ত শুরু করেন। পরে ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানি, নগ্ন সেলফি প্রকাশ, ধর্ষণ চেষ্টা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ফেরদৌসের বিরুদ্ধে অভিযোপত্র দাখিল করেন আফরোজা আইরীন কলি।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে শিক্ষক ফেরদৌস বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি এবং প্রশ্নপত্র ও মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটানোর চেষ্টা করেন। এক ছাত্রীর সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজ বাসস্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এসময় ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি ওয়েবসাইট ও মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এছাড়া পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেয়ার ঘটনাও পাবলিক পরীক্ষা আইনে অপরাধ প্রমাণিত হয়।
পরে ৩ নভেম্বর ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সফিউল আজম শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: তাহের