
ঢাকা: দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি নিজের জন্য না, করতে হবে পরের জন্য; দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করাই আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের মূলতবী যৌথসভায় তিনি একথা বলেন। এর আগের দিন মঙ্গলবার টুঙ্গিপাড়ায় নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম এই যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি শেষ না করে মূলতবি ঘোষণা করা হয়েছিল। যা আবার বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়নটা হবে তৃণমূল পর্যায় থেকে, একেবারে গ্রামের মানুষ আমাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে এবং পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটা মানুষও গৃহহারা থাকবে না, ক্ষুর্ধার্ত থাকবে না। একটা মানুষও বিনা চিকিৎসায় রোগে ধুঁকবে না। কোনো মানুষ নিরক্ষর থাকবে না। বাংলাদেশকে আমরা সেইভাবে গড়ে তুলবো। বিশ্বসভায় বাংলাদেশ যেন মাথা উচু করতে চলতে পারে, জনগণকে আমরা সেইভাবেই গড়ে তুলবো। দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করব। ইনশাআল্লাহ জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো।
আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই দেশে কোনো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। এ জন্য আপনাদের জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে এবং গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। তবে এরই মধ্যে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি বলেই জঙ্গি দমন করতে পেরেছি। কিন্তু এটা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, বিভিন্ন সময়ে নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। তিনি দলের নেতাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও মাদক দূর করার আহ্বান জানান।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে কাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি? যাদের জন্ম হয়েছে ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে…। এ দেশের নির্বাচনকে যারা কলুষিত করেছে, আজ তাদের মুখেই গণতন্ত্রের কথা শুনলে হাসিই পায়। এর বেশি কিছু বলবো না।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে অবরোধের সময় যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে তাদের বিচার হবেই হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাদের নামে কোনো মিথ্যা মামলা দেয়া হয়নি। শত শত নিরীহ মানুষকে তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। ট্রেনে সাধারণ মানুষ গেছে, তাদের আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। সিএনজি-রিকশা পুড়িয়েছে। প্রাইভেটকার থেকে ড্রাইভারকে নামিয়ে তার গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে তারা মানুষ মেরেছে, সারা দেশে তান্ডব চালিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে হবে। তাদের বিচার হতেই হবে। কারণ, এটা এক ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। বিএনপি-জামায়াতের যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়নি।
আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটি রূপরেখাও দলের নেতাদের কাছে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি আছে। সাথে সাথে বলবো, আন্তরিকতা আছে। যার কারণে সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় উন্নতি করতে পারছে। এটা আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার সুফল বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রতিবেদক: শাওন, সম্পাদনা: জাহিদ