
আসো, এদিকে আসো। অইদিকে হিস্ট্রি চ্যানেল।
বরফের ইতিহাস দেখাচ্ছে।
অইটা ফুলদানি। ভেঙে যাবে। দূরে দাঁড়াও।
তুমিও ঘড়ি পড়ো? কয়টা বাজে? তার আগে ঘ্রান নিই।
এসময় কোথাও বাজি পোড়ে। আর যারা গাছের নিচে দাঁড়িয়েছিলো, তারাও হাসতে হাসতে আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। তাদের সবার হাতে বাসি ফুল। বলে, জয়তুন বেঁচে নাই। মৃত্যুর আগে সে ডিএকটিভেট করে গেছে তার আইডি। মাটিতে দাঁড়িয়ে এবং সকালেই। আমরা কীভাবে ফিরবো তবে, ওর কাছে? কীভাবে ট্যাগ করবো আপলোড করা সেলফি? ওহ, এইটাতো ওরই নিক, না?
তাড়াতড়ি আসো। ফ্রেমের ভিতর। ইমো দাও।
জয়তুন একবার হেসেছিল। ওয়ার সিমেট্রিতে গিয়ে। একটা অচেনা গাছ, তার নিচে দাঁড়িয়ে, সর্বকনিষ্ট মৃত যে, তার ছায়াকে আড়াল করতে করতে সে উপরে তাকিয়ে ছিলো অনেকক্ষণ। বলেছিল, এটা নাগালিঙ্গম। বর্ষাকালে ফোটে এবং আর সব ফুলের মতোই ঝরে পড়ে।
ঝরা ফুল দেখতে কেমন? তাতে কি ঘ্রান হয়? সে অ্যাপস ডাউনলোড করতে করতেই অনমনা হয়। আবার ভাবে? আবার বলে, দাম বেড়ে গেছে মাংসের। সবচে দামি সে মাংস, যার গায়ে নাগালিঙ্গমের ঘ্রাণ হয়। বিকেলে, বৃষ্টি হলে।
দেখে, সবাই, আরো যারা যারা ছিল অনলাইনে, ধুপকাঠির ছবি আপলোড করতে থাকে এবং কেউ কেউ অফলাইনে, দ্রুত হাইড করে ফেলে টাইমলাইন, এবাউট। ঢুকে পড়ে একোরিয়ামে। হাসে। হেসে হেসে প্রোফাইলে বদলায়, গোল্ডফিশের সাথে। লিখে রাখে, ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য … সমুদ্রে পাড়ে তখন সুর্যাস্ত। তাই কেউ কেউ, যারা একলা একলা বাড়ি ফেরে, পড়ন্ত সুর্যকে দ্রুত ধরে পুরে ফেলতে চাচ্ছে নিজস্ব টাইম জোনে। তাদের চিনি না ভালো। তবে জানি, তাদের সকলের পকেটেই ঝিনুকে ভরতি আর নাম লেখা। অন্য কারো নাম।। তাই হারানোর আগে আরেকবার অনলাইন হয়। লিখে, ফিলিং লৌন….
অহ, বলে রাখা ভালো, ঝিনুকে প্রিয়জনের নাম লেখানো খুব সস্তা কিন্তু। জোড়া তেরো টাকা। তাড়াতাড়ি আসুন।
বোর লাগে। তাই চ্যানেল বদলাই। রেসিপি দেখাচ্ছে সুন্দরী নারী। থামি। লেবুর রস দিয়ে কাঁচা ঝিনুক কতো টেস্টি বলতে বলতে ফেমাস নারী হাসে। তার দাঁত দেখা যায়। একটা দাঁত কি স্বর্ণ বাঁধা? নিশ্চিত হবার আগেই চোখে পড়ে, দেয়ালে টিকটিকি। টিক টিক করে।
সত্য বলতে কিছু নাই আসলে। কে বলেছেন? জানি না। বিশ্বাস করুন, সত্যিই আমি জানি না। আমার না জানা পার হয়ে যায় সত্য বলা টিকটিকি। সে এখন ফ্রয়েডের ছবি উপর। সংগম করছে। হ্যালো সাবকনশাস! তুমি কই? একা একা কি রাস্তা পার হচ্ছো?
ভালো আছো?
সে হাসে। প্রতিদিন একই প্রশ্ন।
কী কর?
সে হাসে। প্রতিদিন একই প্রশ্ন।
অই?
সে হাসে। প্রতিদিন একই প্রশ্ন।
সরে বসতে বসতে একটা মাছের গায়ে হেলান দিয়ে ফেলি।
মাছের স্মৃতি আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেছিলাম। তার আগে আলো জ্বলে উঠে।
তার আগে একটা অর্ধেক আপেল গড়িয়ে চলে যায়। অইখানে।
খালি মনে হয়, ঘুমিয়ে পড়ছি। ঘুমের ভেতর।
সে হাসে। অইটা? ওটা একটা ফসিল। কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।
কই? দোতলা বাসে। চন্দ্রিমা উদ্যান পার হচ্ছিলাম তখন।
ফসিল হাতেই দেখেছিলাম, ভেতরে একজোড়া কাপল। কাঁদছিল। একসাথে।
তাদের দুজনের মাথাতেই শিঙ। আলো ভরা। একবার জ্বলছিল, আরেকবার নিভছিল।
গোপনে, আমার হেলান দেয়া মাছটি সরে যায়। আমি পড়ে যাই। পড়তে পড়তে আপলোড করে দিই হেমিংয়ের ছবি।
পিঁপড়ার ডিম কিনছেন। একা একা।
শিকারে যাচ্ছো? তার আগে এই দিকে দেখো। এটা জিওগ্রাফি চ্যানেল।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসপিকে/এসআই