
মিশুক মনির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ‘রামপাল সম্পূর্ণ প্রতারণার প্রজেক্ট। সরকার আল্ট্রা টেকনোলজির কথা বলে দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ড. আনু মোহাম্মাদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বৃহস্পতিবার ‘সুন্দরবনের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে প্রতীকী গণভোটের’ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যদি সরকার তার নিজ দলের ভিতরে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দেয় তবে তার দলীয় লোক জনের মধ্যে থেকেও শতকরা ৯৯ শতাংশ ব্যক্তি রামপাল প্রকল্পের বিপক্ষে ভোট দেবে।’
কিছু মুনাফার লোভে পরিকল্পিতভাবে সুন্দরবনকে ধ্বংস করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিশেজ্ঞদের মতামত ও গণমানুষের রায় উপেক্ষা করে, সরকার পরিকল্পিতভাবে সুন্দরবনকে ধ্বংস করছে।’
সুন্দরবনের গুরুত্ব তুলে ধরে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সুন্দরবন মরে যাওয়া মানে হচ্ছে বাংলাদেশ মরে যাওয়া। এই সুন্দরবনে অসংখ্য প্রাণ আছে বলে আমরা বলি মহাপ্রাণ। এই প্রাণ কেবল সুন্দরবনের ভেতরেরই না মানুষের প্রাণও রক্ষা করে।’
আনু মুহাম্মদ বলেন, বন টিকে থাকার জন্য মানুষের প্রয়োজন নেই কিন্তু মানুষ টিকে থাকার জন্য বনের প্রয়োজন আছে।
রায় প্রকাশের আগে তিনি বলেন, ‘যে ডাক্তার সাধারণ অপারেশন করতে গিয়ে মানুষ মেরে ফেলে ওই ডাক্তার যখন সুন্দরবনের কথা বলে তখন বুঝতে বাকি থাকে না কী হচ্ছে। গাছ-পালা, পশুপাখি যেখানে বাঁচতে পারে না সেখানে মানুষ বাঁচতে পারে কিভাবে? মূলত ভাড়াটে কথার কোনো লাগাম থাকে না।’
গত অক্টোবর মাস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শাখার উদ্যেগে রামপাল প্রকল্প নিয়ে গণভোটের আয়োজন করে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এ গণভোট নেয় এই প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনটি।
গণভোটে অংশগ্রহণ করে মোট ১০ হাজার ১১১ জন। এতে সুন্দরবনের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষে ভোট দেয় ৮৬০ জন, যা শতকরা হিসেবে মোট ভোটের ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর বিপক্ষে অর্থাৎ সুন্দরবনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯ হাজার ১৪৮ জন, যা মোট ভোটের ৯০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বিভিন্ন কারণে ভোট বাতিল হয়েছে ১০৩টি, যা শতকরা ১ দশমিক ১ শতাংশ।
ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা, ঢাবি শাখার সভাপতি ইভা মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক সালমান সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তুহিন কান্তি দাসসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল দলের নেতা-কর্মীরা।
সম্পাদনা: জাহিদ