
ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানার অব্যবহৃত জমিতে যৌথ বিনিয়োগে পণ্য বৈচিত্রকরণের উপযোগী নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে। এর ফলে বহুমুখী শিল্পপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যে মূল্য সংযোজনের সুযোগ তৈরি হবে। এ ধরনের উদ্যোগ অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে।
জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী কমিটির (ইসিএনসিআইডি) সভায় রোববার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সভায় সভাপতিত্ব করেন। দেশব্যাপী পরিকল্পিত শিল্পায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গঠিত জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের (এনসিআইডি) সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্প-কারখানায় চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। তিনি গৃহস্থালি ও পরিবহনে জ্বালানি হিসেবে সিলিন্ডার ও এলএনজি ব্যবহার করে শুধু শিল্প-কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দেন। বগুড়ায় কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।
আমির হোসেন আমু বলেন, শিল্প বিকাশের পথে অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের পাশাপাশি চিনি শিল্পে পণ্য বৈচিত্রকরণের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে চিনিকলগুলোর উপজাত (বাই-প্রোডাক্ট) কাজে লাগিয়ে নতুন পণ্য উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, চিনিকলগুলোতে অমৌসুমে ‘র’সুগার থেকে পরিশোধিত চিনি উৎপাদন এবং সুগার বিট ব্যবহার করে চিনি উৎপাদনের কাজ চলছে। তিনি এলাকাভিত্তিক শিল্প কাঁচামালের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে শিল্প স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেন।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি, কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্, জ্বালানি বিভাগের সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব সিরাজুল হক খানসহ শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বস্ত্র ও পাট, মৎস ও প্রাণিসম্পদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, কৃষি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, পরিবেশ ও বন, ভূমি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মহিলা ও শিশু, বিদ্যুৎ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, স্থানীয় সরকার ও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিসিক, বিনিয়োগ বোর্ড, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এসএমই ফাউন্ডেশন, পরিকল্পনা কমিশন, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, আইসিবি, বেপজা, বেজা, এফবিসিসিআই, চট্টগ্রাম চেম্বার, বিসিআই, এমসিসিআই, নাসিব ও বিপিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দেশব্যাপী শিল্পায়ন প্রক্রিয়া জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ক্লাস্টারভিত্তিক শিল্প কারখানায় ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি, কৃষিভিত্তিক শিল্পে প্রণোদনা প্রদান, জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রসার, পরিবেশবান্ধব জাহাজ রিসাইক্লিং শিল্প স্থাপনে নীতি সহায়তা প্রদান, জাহাজ ভাঙ্গা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে বিসিকে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু, প্যাকেজিং আইন প্রণয়ন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থে এন্টি ডাম্পিং মেকানিজম গড়ে তোলাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কার্যক্রম বেগবান করার লক্ষ্যে দ্রুত একটি জাহাজ নির্মাণ নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/ডিএম/জাই