
এম. রেজাউল করিম ঢাকা: সফটওয়্যার প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস(বেসিস) ২০১৪ সালে এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানর ঘোষণা ছিল- সফটওয়্যার রপ্তানি আয় পাঁচ বছরের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
আড়াই বছর পেরিয়ে গেছে। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছে না বর্তমান কমিটি-এমন অভিযোগ তুলেছেন অনেক সদস্য। তাদের ভাষায়-‘কমিটি নতুন ফ্রিল্যান্সার ও সরকারের দেওয়া এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও পলিসি নিয়ে কাজ করেছেন। এর সাথে যদি সদস্যদের প্রতিও তারা সু-নজর দিতেন, এবং তাদের উন্নয়নে কাজ করতেন তাহলে হয়তো এই লক্ষ্যমাত্রা আরো আগেই অর্জন হতে পারতো।’
জানা যায়, প্রতি বছরে বড় ধরনের প্রণোদনা গ্রহণ করেও গত কয়েক বছরে বেসিসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতের প্রবৃদ্ধি ক্রমশ কমেছে। খোদ বেসিসের করা ২০১৫ সালের এক জরিপ দেখা যায়, ২০১০–১১ অর্থবছরের পর থেকে সফটওয়্যার খাতের প্রবৃদ্ধি কমছেই। ২০১২ সাল থেকেই সফটওয়্যার রপ্তানিতে গতি ধীর হয়ে গেছে। এমনকি সবচেয়ে হতাশাজনক বছর ছিল ২০১৪–১৫ অর্থবছর।
এ ব্যাপারে বেসিসের বর্তমান সভাপতি শামীম আহসান নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, সফটওয়্যার প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসলে কিছু তথ্য সংকট আছে। আমাদের সদস্যরা সফটওয়্যার রপ্তানীর পর যখন ব্যাংকে তাদের কাগজপত্র জমা দেন তখন সেখানে সফটওয়্যার নাকি ইনফরমেশন এনিয়ে বিস্তারিত না লেখায় বাৎসরিক হিসাবে তা উঠে আসেনি।
আর্থিক পরিমাণ হিসেব করলে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ অর্ধেক সময়ে বেসিসের অর্জন হওয়ার কথা ছিল সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে এই খাতে অর্জন হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার মত।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সফটওয়্যার এবং কম্পিউটার ও প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা রপ্তানির আয়ে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি আয় এসেছে ১০ কোটি ৭০ লাখ তিন হাজার মার্কিন ডলার। টাকার অংকে যা ৮০০ কোটি টাকার বেশি। যার প্রবৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ১১ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ছয় দশমিক ২২ শতাংশ। এটি ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ছয় দশমিক ২২ শতাংশ বেশি। তখন প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রা থেকে এ খাতের আয় ছয় দশমিক ১২ শতাংশ পিছিয়ে ছিল। এ সময়ে আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০১২-১৩ শেষে আয় ছিল ১০ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
এবিষয়ে শামীম আহসান বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত প্রতিবেদনে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। এখানে অনেক তথ্যই উঠে আসেনি। আমরা নিজেরা একটি পরিসংখ্যান করেছি, সেখানে আরো অনেক বেশি অর্জন হয়েছে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/আরকে/এফআর