
ঢাকা: লালন অনুসারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ধর্মের সাথে শিল্পের কোন বিরোধ নেই। অথচ আজ কতিপয় উগ্রপন্থী ধর্মকে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। লালন কখনও ইসলামের বিপক্ষে বলেননি, বাউলরা কখনও ধর্মের বিপক্ষে বলেননি। এই ধর্মান্ধদের আসল উদ্দেশ্য কী, তা এখন স্পষ্ট। তাই সরকারের উচিত শক্ত হাতে ধর্মান্ধদের প্রতিহত করা। নইলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিনীত অনুরোধ, বাউলদের নিরাপত্তা দিন, লালন অনুসারীদের রক্ষা করুন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে রক্ষা করুন।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান যেমন-মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ী, নাটোরের সাধুসঙ্গে বাউলদের ওপর হামলার পর কয়েকদিন আগে নেত্রকোনায় ‘হেফাজতে ঈমান’ নামের একটা সংগঠনের আবদারের মুখে স্থানীয় প্রশাসন একটি বাউল উৎসব বন্ধ করে দেয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে এই কাজে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাউলদের ওপর বর্বরোচিত হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই নেত্রকোনায় ‘হেফাজতে ঈমান’ নামে একটা সংগঠন লালন অনুসারীদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের আবদারে লালন উৎসব বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। হেফাজতে ঈমান লিফলেটও ছড়িয়েছে লালনপন্থী বাউলদের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, বাউলরা ইসলাম মানে না, তাই তাদের গান বাজনা বন্ধ করতে হবে। দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার, তখন বাউলদের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের এই আক্রমণ হতাশাজনক। মনে রাখতে হবে, লালন আমাদের শেকড়, বাউলরা আমাদের সংস্কৃতির প্রাণ। তাই বাউল বা লালনপন্থীদের ওপর হামলা মানে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর হামলা।’
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী রুদ্র রুদ্রাক্ষের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত শিল্পী পান্থ কানাই, সাংবাদিক ফররুখ বাবু, সাংবাদিক মহুয়া সৈয়দা, সামাজিক সংগঠন ছায়া-র চেয়াম্যান রাইহান কবির রনো প্রমুখ। এছাড়াও বাউল শফি মণ্ডল ও অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
প্রতিবেদক: আশিক মাহমুদ, সম্পাদনা: প্রীতম সাহা সুদীপ