
ভ্যালেত্তা(মাল্টা): লিবিয়ার ছিনতাই করা বিমানের সব যাত্রী এবং ক্রুদের মুক্তি দেয়া হয়েছে এবং ছিনতাইকারীরাও আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছেন মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকাত। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন।
দুজন ছিনতাইকারী ১১৮ জন যাত্রীসহ লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা আফ্রিকিয়াহ এয়ারয়েজের এয়ারবাস এ-৩২০ বিমানটি ছিনতাই করেন। তারা নিজেদের লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফির সমর্থক বলে দাবি করেন।
ছিনতাইকারীরা প্রথমে বিমানটি ভূমধ্যসাগরের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টায় অবতরণ করানোর পর এটি যাত্রীসহ উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে যাত্রীদের সবাইকে ছেড়ে দিলেও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দর কষাকষির জন্য বিমানের কয়েকজন ক্রুকে জিম্মি করে রাখেন। তারা মাল্টায় রাজনৈতিক আশ্রয়ও প্রার্থনা করেন।
বিমান ছিনতাইকারীদের একজন লিবিয়ান টিভিতে জানান, তিনি সাবেক লিবিয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে সমর্থন করা একটি পার্টির প্রধান নেতা। নিজেকে মুসা শাহ নামে উল্লেখ করা ব্যক্তিটি ফোনের মাধ্যমে জানান, তিনি আল-ফাতেহ আল-জাদিদ অথবা নিউ আল-ফাতেহ গ্রুপের প্রধান। ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে লিবিয়ায় গাদ্দাফি যে অভ্যুত্থান করেছিলেন তা আল-ফাতেহ নামে অভিহিত করেছিলেন তিনি।
ছিনতাই এর শিকার বিমানের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে লিবিয়ার একজন সংসদ সদস্য নিশ্চিত হয়েছেন, ছিনতাইকারীরা গাদ্দাফিপন্থী একটি পার্টি সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া মিডিয়ায় প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, গাদ্দাফির সমর্থকরা যে রকম সবুজ পতাকা ব্যবহার করেন ঠিক একইরকম একটি পতাকা হাতে একজন ছিনতাইকারী বিমান থেকে নেমে আসছেন।
মাল্টার বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, ছিনতাই করা বিমানটি লিবিয়ার অভ্যন্তরে চলাচল করা একটি বিমান। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সেবহা থেকে রাজধানী ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। এতে ১১১ জন যাত্রীসহ ৭ জন বিমান কর্মকর্তা ছিলেন।
এদিকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বিমান ছিনতাই হওয়ার কথা পাইলট ত্রিপোলির কন্ট্রোল টাওয়ারে জানিয়েছিলেন। এরপরেই বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে লিবিয়ার তৎকালীন শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। বর্তমানে আইএসসহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী লিবিয়ায় সক্রিয় রয়েছে।সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
গ্রন্থনা: ফারহানা করিম, সম্পাদনা: জাহিদ