
নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পলাতক শরীয়তপুরের ইদ্রিস আলী সরদারের (৬৭) বিরুদ্ধে যেকোন দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে নির্ধারিত করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য বিচারপতিরা হলেন, মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মাদ সোহরাওয়ার্দী।
বুধবার ট্রাইব্যুনালে সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আলম মালুম ও রেজিয়া সুলতানা চমন।অপরদিকে আসামী সোলায়মান মোল্লার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে আদালতের নির্দেশে নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।
এর আগে এই মামলায় আটক আরেক আসামি মো. সুলা্ইমান মোল্লা (৮৪) সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রসিকিউশনের ১২ জন এবং তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. হেলাল উদ্দিনসহ মোট ১৩ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেছেন। আসামীপক্ষ তাদের জেরার কার্যক্রম শেষ করেছেন।
সর্বশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. হেলাল উদ্দিনের জেরার কার্যক্রম শেষে মামলায় আর্গুমেন্ট (যুক্তিতর্ক) উপস্থাপন করার জন্য ২৫ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত দিনে মৃত সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও পলাতক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক(আর্গুমেন্ট)যুক্তিতর্ক পেশ শুরু হয় ২৫ অক্টোবর থেকে।
এর আগে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে গত ১৪ জুন রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সলেমান মৌলভীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ১৫ জুন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
২০১০ সালে শরীয়তপুরের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদারের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সলেমান মৌলভী সলেমান ও ইদ্রিস আলী সরদারসহ সাতজন।এদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন।
তাদরে বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ হল, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের নেতৃত্বে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া, কাশাভোগ, মানোহর বাজার, মধ্যপাড়া, ধানুকা, রুদ্রকরসহ হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোতে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায়।
আরও অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরে তারা মাদারীপুরের এআর হাওলাদার জুট মিলে রাজাকার হিসেবে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। তাদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে। নারীদের হত্যার আগে ক্যাম্পে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালায়।
প্রতিবেদন: ফায়েজ, সম্পাদনা: প্রণব