
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ এখনো চলছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থী ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে পাঁচ শিক্ষার্থীকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ থানার সামনে থেকে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ। ওদিকে শিক্ষার্থীরা চারুকলার সামনে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছে। পরিস্থিতি এখনো থমথমে। শাহবাগ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জলকামান দেখা গেছে তিনটি। জাতীয় পতাকা নিয়ে ক্রমান্বয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে আসছে আন্দোলনকারীরা।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাটিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা শুরু করে পুলিশ। এরপরই ফাঁকা হতে শুরু করে শাহবাগ। ছত্রভঙ্গ করে দেয়ায় শাহবাগ পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ দুপুর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।
কেন্দ্রীয়ভাবে আজ রোববার বেলা দুইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন তাঁরা।
কোটা সংস্কার কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের দাবি, বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংস্কার করে কমাতে হবে। চাকরিতে কোটা সব মিলিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা শাহবাগের মূল রাস্তায় অবস্থান নেওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সে সময় আন্দোলনকারীরা বলছিলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট আলোচনা শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং শাহবাগ মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখবেন।
তখন থেকে শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। এ সময় আন্দোলনকারী ও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিতে দেখা যায়। পুলিশ একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের অগ্রাধিকার কোটা রয়েছে। আর বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। এ জন্য এই কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: এম কে রায়হান