
ডেস্ক: চিত্রকর্মে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিকৃতি দেয়া যার অভ্যাসগত বৈশিষ্ট্য, তিনি পেইন্টার শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তার আত্মকথন থেকেই জানা যায়, তখন সময় ১৯৬৩ সাল। পেইন্টার শাহাবুদ্দিন আহমেদ তখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। বাবার সাথে গিয়েছিলেন পল্টন, রাজনৈতিক সমাবেশে। সেখানেই প্রথম বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনা, আর তখন থেকেই পেইন্টারের অন্তরের অন্তঃস্থলে আঁকা আছে বঙ্গবন্ধুর ছবি।
তারপর, ১৯৭৪ সালে বৃত্তি নিয়ে প্যারিস যাওয়ার আগে পর্যন্ত নিয়মিত যোগাযোগ ছিল দু’জনের। বঙ্গবন্ধুর বাসভবন বা কার্যালয়, অবাধ যাতায়াতের সুযোগ ছিল সবসময়। যুদ্ধ শেষে অস্ত্র জমা দেয়ার সময় যখন বঙ্গবন্ধু জানতে পারেন শাহাবুদ্দিন আর্ট কলেজের ছাত্র, তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘পারবি না পিকাসোর চেয়ে বড় হতে?” শৈশব স্বপ্নের নায়কের কাছে থেকে এত বড় অনুপ্রেরণা প্রেয়ে বঙ্গবন্ধু প্রেমে মজে শিল্পী সত্ত্বা।’
আট ফুট বাই চার ফুট ক্যানভাসে প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিজ হাতে বয়ে নিয়ে যাওয়ার পর শাদা কাপড়ের ঢাকনা খুলতেই চিৎকার করে ওঠেন বঙ্গবন্ধু ‘এই তাজউদ্দীন, দেখো দেখো কী এঁকেছে! এই তো সোনার ছেলেরা আমার! ওরাই তো একদিন সোনার বাংলা বানাবে!” বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের সে ছবি দেখিয়ে তিনি বলতেন “দেখ আমার দেশের ছেলেরাও আঁকতে পারে। খালি যুদ্ধ করে না, ছবিও আঁকে।’
বন্যার ত্রান তহবিলের জন্য নিজের পেইন্টিং বিক্রির টাকা বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিলে বঙ্গবন্ধু তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। শাহাবুদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধা বাবার হাতে তুলে দিতে বলে সেই টাকা। দেশের জন্য এইটুকু সহায়তা করার সুযোগের জন্য শাহাবুদ্দিন আহমেদ জোরাজোরি করতেই কেঁদে ফেলেন বঙ্গবন্ধু। তাই শাহাবুদ্দিন আহমেদের ক্যানভাসে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসে বারবার।
নিউজনেক্সটবিডিডটকম/এসকেএস/টিএস