
ঢাকা: টানা কয়েকদিনের মেঘলা আবহ আর বৃষ্টির কারণে প্রকৃতিতে হালকা শীতের আমেজ। গ্রাম বাংলায় তো বটেই ইট-কাঠের এই যান্ত্রিক নগরেও তার রেশ শীতের আগামবার্তার কথায় মনে করে দিচ্ছে। আর শীত এলেই বাংলার আনাচে কানাচে শুরু হয় কয়েক হাজারের পুরনো বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যন্য সব আয়োজন। তারই আভাস এখন বইছে রাজধানী ঢাকায়।
সেই আভাসের উদাহরণ মিলল সোমবার হেমন্তের স্নিগ্ধ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে। সেখানে পরিবেশিত হলো শাস্ত্রীয় সংগীত আর নৃত্যের অনাবিল সুর-ছন্দের ঢেউ। সেই ঢেউয়ে ভালো লাগার অনন্যতায় ভাসিয়ে নিয়ে গেল আগত সুরপিয়াসীদের।
শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই শাস্ত্রীয় সংগীতসন্ধ্যায় ‘হংসধ্বনী রাগ পূরীয়া ধানেশ্রী, বাগেশ্রী’ ইত্যাদি রাগের পরিবেশনা করে দেশের শাস্ত্রীয় সংগীতঙ্গরা। তাদের-রাগ, তাল, লয় ও ছন্দের সমন্বিত সংমিশ্রণের এই শুদ্ধসঙ্গীতের শৈল্পিক স্রোতে ভেসে যায় মিলনায়তনে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা।
উষ্ণতার অনাবিল পরশ ছোঁয়ানো এই শুদ্ধ সংগীতের আসর শুরু হয় যন্ত্রসংগীতে শাস্ত্রীয় কর্ণাটকি রাগ ‘হংসধ্বনী’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এই যন্ত্রসংগীতে পরিবেশনা পরিচালনায় ছিলেন-শিল্পী মনিরুজ্জামান। এরপরেই শুরু হয় কন্ঠসঙ্গীতে রাগ ‘পূরীয়া ধানেশ্রী’ পরিবেশন। শিল্পী অসিত কুমার দে’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় এই সন্ধ্যাকালীন সন্ধী প্রকাশ রাগ ‘পূরীয়া ধানেশ্রী’।
এরপরেই শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা পরিবেশন করে সমবেত চর্যানৃত্য ‘মঞ্জুশ্রী’। নৃত্য পরিবেশন শেষে আবারও মঞ্চে আসেন শিল্পী অসিত কুমার দে। এসময় তিনি একক কণ্ঠে পরিবেশন করেন শাস্ত্রীয় সংগীত। তার এ একক শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশনা শেষেই শুরু হয় বেলায়েত হোসেন খানের পরিচালনায় ‘গণেশ বন্দনা ও আলারিপু’ শীর্ষক দলীয় ‘ভরতনাট্যম’ নৃত্য পরিবেশন। অতঃপর একক শাস্ত্রীয় সংগীত নিয়ে মঞ্চে আসেন-শিল্পী প্রিয়াংকা গোপ। তিনি পরিবেশন করেন রাগ ‘বাগেশ্রী’।
শুদ্ধ সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠানের এই আয়োজনের সবশেষে মুনীরা পারভীন হ্যাপীর পরিচালনায় পরিবেশিত হয় দলীয় ‘কত্থক নৃত্য’। কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আবৃত্তি শিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়।
সম্পাদনা: শিপন আলী