
চুয়াডাঙ্গা: জেলার দামুড়হুদা উপজেলার পীরপুরকুল্লা গ্রামে সৎ মা সাত বছরের একটি শিশুকে হাত পা বেঁধে পিঁপড়ার চাকে ফেলে নির্যাতন করেছে। এই ঘটনায় শিশু জুনাইদের পিতাকে আটক করা হয়েছে কিন্তু সৎ মা পলাতক।
স্থানীয় একটি দৈনিকে শিশু জুনাইদের নির্যাতনের খবর পড়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদকে নির্দেশ দেন।
দামুড়হুদা থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে জুনাইদের পিতা জামসেদকে আটক করতে সক্ষম হলেও তার সৎ মা পালিয়ে যায়। দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ বলেন, ‘এসপি স্যারের নির্দেশ পেয়ে তদন্তকাজ শুরু করেছি। তবে নির্যাতিত শিশুটির পাষন্ড পিতাকে আটক করতে পারলেও তার সৎমা পালিয়ে গেছে।’
প্রতিবেশীরা জানায়, দামুড়হুদা উপজেলার পীরপুরকুল্লা গ্রামের জামসেদ আলী কার্পাসডাঙ্গা বাজারের ব্রিজ মোড়ে ফলের ব্যবসা করেন। তিনি তিনবার বিয়ে করেন। প্রথম দু’জন স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে রোজিনা নামের একজনকে তৃতীয়বার বিয়ে করেন তিনি।
জুনাইদ, জামসেদের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। পারিবারিক কলহের কারণে বিষপান করে জুনাইদের মা যখন মারা যায়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর। এর কয়েকমাসের মধ্যেই তৃতীয় বিয়ে করেন জামসেদ। কিন্তু সৎ মা শিশুটিকে প্রতিনিয়তই নির্যাতন করতো।
এরই মাঝে গত সোমবার সকালে পুকুরে গোসল করার অপরাধে জুনাইদকে তার পাষন্ড বাবা ও সৎ মা মিলে হাত পা বেঁধে পিঁপড়ার চাকে ফেলে রাখে। পিঁপড়ার কামড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে পানি খেতে চায় সে। কিন্তু তার সে আকুতিতে সাড়া দেয়নি তার পিতামাতা। এমনকি তার মুখে একফোঁটা পানিও দেয়নি।
এক সময় শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে, একই পাড়ার কলিমের ছেলে বাবলু তাকে পিঁপড়ার চাক থেকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে স্থানীয় মেম্বার রাজ্জাক তার বাবা মাকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেন। ভবিষ্যতে জুনাইদের সঙ্গে এমন আচরণ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুনাইদের বাবার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘ওর সৎমার কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার।’
এদিকে এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল জুনায়েদের বাবা জামসেদ ও সৎমা রোজিনার শাস্তির দাবি করেছেন।
প্রতিবেদন: প্রতিনিধি, সম্পাদনা : ফারহানা করিম, জাহিদুল ইসলাম