
তুহিন সাইফুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালকে এক হাত নিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক।
নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দুদের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে মন্ত্রীর সাথে দেখা না করায় রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের কড়া সমালোচনা করেন ছায়েদুল হক। দুপুরে উপজেলার আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী ও সুলতানা কামালের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা ঢাকা থেকে নাসির নগর এসেছেন, গৌরমন্দিরে যেতে গিয়েছেন অথচ আমার সাথে দেখা করতে আসতে পারেন নি। আমি ৩০ বছর ধরে এখানকার জনপ্রতিনিধি। সত্য জানতে হলে আমার কাছে আসতে হবে। এখানকার হিন্দুরা আমার সন্তানের মতো।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩ আসনের এমপি রবিউল মুক্তাদির চৌধুরীর সমালোচনা করে ছায়েদুল হক বলেন, ‘নাসির নগরের ঘটনায় মুক্তাদির তিন আওয়ামী লীগ নেতাকে বহিস্কার করেছেন। ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি এলাকায় আসেননি। তাহলে তিনি কোন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বহিস্কার করলেন।’
উল্লেখ্য, ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদের নামে ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। একাধিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, নাসিরনগরের ইউএনও মোয়াজ্জেম ও ওসি আবদুল কাদেরের উপস্থিতিতে একটি সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেয়া হয়। এর পরপরই চালানো হয় এ হামলা।
এদিকে ঘটনার পর সহস্রাধিক লোককে আসামি করে দুটি মামলা হয়। গঠন করা হয় তিনটি তদন্ত কমিটি। মন্দিরসহ বাড়িঘরে হামলার পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই শুক্রবার ভোরে উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকায় সংখ্যালঘুদের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ওই ঘটনায় প্রশাসন পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক উত্তেজিত হয়ে ‘মালাউনের বাচ্চারা বেশি বাড়াবাড়ি করতাছে’ এমন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
সম্পাদনা: প্রীতম সাহা সুদীপ