
ডেস্ক: বিয়ের পর প্রায় সব নববধূর সঙ্গেই শাশুড়ির সম্পর্ক থাকে মধুর। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সে সম্পর্কে জং ধরে; অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যার শুরুটা হয় পরিবারে আগত নতুন মুখের লালন-পালন সংক্রান্ত মতবিরোধে। প্রতি পদে পদে শুণতে হয় প্রবীণ মায়ের অতীত লব্ধ অভিজ্ঞতার কথা, শাসন-মাত্রার সংজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে।
অন্যদিকে মাত্র মাতৃত্বে পদার্পন করা নবীন মা তীক্ষ্ণ সমালোচনার বানে বিদ্ধ করেন তার সন্তানের পিতামহীকে।
সমসাময়িক নবীন মায়েদের সাথে আলোচনা করে দেখা গেছে, তাদের অধিকাংশই মাতৃত্বের কোনো না কোনো পর্যায়ে সন্তানের লালন-পালন ও শাসনের ব্যাপারে শাশুড়িদের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন ‘দাদীর লাই পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠেছে’ জাতীয় উক্তি উচ্চারণ করেও অভ্যস্ত তারা। মতামতে ভিন্নতা থাকতেই পারে, সময়ের বিবর্তনে প্রসিদ্ধ রীতি-নীতিও একসময় বাতিল হয়ে যায়, কিন্তু পারিবারিক সম্পর্ক ও পরিস্থিতির ভাব-মূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলা আবশ্যক। নবীন মায়েদের একটি দলের সাথে আলোচনা করে এসকল জটিলতা কাটিয়ে ওঠার কিছু পদ্ধতি নিয়ে লিখছেন এস এন দোলা।
- প্রথমে বলতে দিন, মনযোগ সহকারে শুনুন, তারপর বলুন। সবার মতামত সম্পর্কে জ্ঞাত হবার পর নিজ ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা তো আপনার দখলেই আছে! হতেই পারে রীতিসিদ্ধ কোনো নিয়মের ঘোর বিরোধী আপনি, কুসংস্কারে আপনার বিশ্বাস নেই। সেক্ষেত্রে নিজ বক্তব্যের পক্ষে তথ্য, যুক্তি, প্রমাণ ও উদাহরণগুলো বিনয়ের সাথে প্রকাশ করুন। আপনার ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠার পেছনের কারণ বর্ণনা করুন। নেতিবাচক সিদ্ধান্ত শিশুর ওপর কি প্রভাব ফেলতে পারে সে ব্যাপারে তার সাথে আলোচনা করুন।
- সন্তানকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবার সময় সঙ্গি করুন আপনার শাশুড়িকেও। সন্তানের লালন পালন ও যত্নের ব্যাপারে যে বিষয়গুলো নিয়ে আপনারা তর্ক করেন সেগুলো উত্থাপন করুন। দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শে আপনাদের তর্ক ঘুচবে বলে আশা করা যায়।
- শাশুড়ির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখুন। মাতৃত্ব কোনো ছেলেখেলা নয়। মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যখন রাগে নিজের মাথার চুল টেনে ছিঁড়তে ইচ্ছা করে। তাছাড়া, এমন হবার সম্ভাবনা বেশী যে প্রথম মাতৃত্বের সময় আপনার শাশুড়ির বয়স আপনার চেয়ে কম ছিলো, তাই তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান, তার সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। দেখবেন তিনিও আপনার সন্তান পালন প্রক্রিয়ার প্রশংসা করছে।
- আপনার শাশুড়ি যে সন্তান পালনে দক্ষ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ আপনি নিজেই, কারণ আপনি আপনার জীবন সঙ্গি হিসেবে তার সন্তানকেই বেছে নিয়েছেন। তাই নিজ সন্তান পালনের ক্ষেত্রেও শাশুড়িকে বিশ্বাস করুন। দেখবেন পরিবারে বইছে শান্তির সুবাতাস।
নিউজনেক্সটবিডিডটকম/এসকেএস/জাই