
ডেস্কঃ মৃত বঙ্গবন্ধু পরিবারের ছবি তুলতে সর্বপ্রথম ধরে নিয়ে যাওয়া হয় দৈনিক বাংলা’র চীফ ফটোসাংবাদিক গোলাম মাওলাকে। তখন শেষ রাত। গোলাম মাওলা কাজের চাপে অফিসেই থেকে গিয়েছিলেন সে রাতে। পত্রিকা কার্যালয় থেকে চোখ বেঁধে তাকে ধরে নিয়ে যায় উর্দি পরিহিত সেনাবাহিনীর একটি দল।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবনের ভেতরে নিয়ে তার চোখের অন্ধপট্টি খুলে দেয় তারা। ছবি তুলতে বলে। আদেশ মোতাবেক একের পর এক ছবি তুলতে থাকেন ফটোগ্রাফার গোলাম মাওলা। ছবি তোলা শেষ হলে আবার অন্ধপট্টি বেঁধে কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ‘দৈনিক বাংলা’র ডার্করুমে, ছবি নেগেটিভ থেকে পসিটিভ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেনাবাহিনীর একটি দল কড়া নজরে রাখে গোলাম মাওলাকে। নেগেটিভসহ ওয়াশ করা ছবি নিয়ে গোলাম মাওলাকে কার্যালয়ে রেখেই চলে যায় তারা।
গোলাম মাওলা আজ জীবিত নেই, তার দৌহিত্র চলচ্চিত্র মাধ্যমের শিক্ষার্থী ও নির্মাতা গোলাম দাইয়ানের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছবির কোন রকম কপি রাখতে দেয়া হয়নি তার দাদুকে। তিনি আরো বলেন, “বাবার মুখে শোনা, সেদিনের পর থেকে দাদু নাকি মানসিকভাবে বেশ মুষড়ে পড়েন। পরে, ১৯৮৩ সালে, ব্রেইন হ্যামারেজ থেকে দাদু মারা যান। তখন তার বয়স ছিল ৪৮ বছর।”
গোলাম মাওলা ছিলেন আরমানিটোলা ফটোগ্রাফিক ইন্সটিটিউটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। ক্যামেরার জাদু দেখিয়ে জীবদ্দশায় বহু সুনাম কামিয়েছেন, মিলেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। কর্মজীবনের শুরু দৈনিক পাকিস্তানে, শেষ পর্যায়ে দৈনিক বাংলার চীফ ফটোগ্রাফার।
গোলাম মাওলা ১৯৩৫ সালে ফেনী জেলার সোনাপুর উপজেলার বিখ্যাত মজুমদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ওনার সুযোগ্য দৌহিত্র গোলাম দাইয়ান জানিয়েছেন, তিনি তার দাদু গোলাম মাওলাকে নিয়ে একটি বায়োগ্রাফিক ডকুমেন্টারি নির্মানের কাজে হাত দিয়েছেন। এছাড়াও গোলাম মাওলার তোলা নানান ছবি ও নেগেটিভ রিস্টোর করতে দেয়া হয়েছে, যা নিয়ে একটি ফটোগ্রাফিক এক্সিবিশনেরও ইচ্ছা পোষণ করেন গোলাম দাইয়ান। এতে করে গোলাম মাওলার ব্যাপারে অজ্ঞ তরুণ প্রজন্ম কিছুটা হলেও জানতে পারবে এই ফটোগ্রাফারকে।
নিউজনেক্সটবিডিডটকম/এসকেএস/টিএস