
ঢাকা: চট্টগ্রাম টেস্টের আগে হয়তো কল্পনাও করেননি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাদা-পোশাকের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটবে তার। অনেকটাই স্বপ্নের মতো দলে ডাক পান মেহেদী হাসান মিরাজ। একই টেস্টে অভিষেক হয় সাব্বির রহমান ও কামরুল ইসলাম রাব্বির। ওই টেস্টে যেমন আচমকা ডেব্যু ঘটেছে তার, তেমনি নির্বাচকদের মুখও রক্ষা করেছেন নিজের বোলিং ক্যারিশমা দিয়ে। অভিষেকেই ৮০ রানের খরচায় তুলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ইংলিশ ব্যাটিং লাইন তছনছ করে দিয়েছে ১৯ বছর বয়সী এ স্পিনার। ৮২ রানে ইংল্যান্ডের ৬ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন তিনি। বিশ্বের তৃতীয় ও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখালেন মিরাজ।
প্রথম টেস্টের আগে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কাছে ‘অপরিচিত’মিরাজের উইকেট পাওয়া কিছুটা সহজ হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে এ কাজটা ছিল অনেকটাই কঠিন। কারণ মিরাজের বোলিং কাঁটাছেঁড়া করার অনেক সময় তারা পেয়েছিল। কিন্তু মিরাজ ইংলিশদের কাছে নিজের বোলিংয়ের গোপন রহস্যটা উন্মোচণ করেননি। ফলে ঢাকা টেস্টেও ৬ উইকেট তুলে নেন। ব্যাক টু ব্যাক পাঁচ উইকেট পাওয়া যে সহজ ছিল না সেটা নিজেও জানেন মিরাজ। এ জন্য অবশ্য দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের পরামর্শটাই তাকে বড় সহযোগিতা করেছে বলে জানান।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মিরাজ বলেন, ‘টানা দুই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেয়া কঠিন ছিল আমার জন্য। কিন্তু দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের পরামর্শই আমাকে পাঁচ উইকেট পাওয়াতে সাহায্য করেছে। সিনিয়ররা আমাকে সাপোর্ট করেছেন। তারা আমাকে বুঝিয়েছেন, কষ্ট করে উইকেট নিতে হবে। ভালো বল করতে হবে। যদি ভালো বল করতে পারি তাহলে যে কোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই খেলা কঠিন।’
নিজের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি এ অলরাউন্ডার, ‘অবশ্যই ভালো লাগছিল। কারণ দুইবার পাঁচ উইকেট পেয়েছি। আমার কাছে খুব ভালো লাগছিল। আমি কখনোই আশা করিনি আজও এতোগুলো উইকেট পাবো। কিন্তু চেষ্টা করি সব সময় যেন স্বাভাবিক পারফরম্যান্স করতে পারি।’
এদিকে, মিরাজকে প্রশংসার ফুলঝুড়িতে ভাসিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান সাবেক কোচ স্টুয়ার্ট ল। তিনি বলেন, ‘আমি বলবো মিরাজ অনেক পরিপক্ক ক্রিকেটার। যখন যা শেখাতে চেয়েছি তা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতো এবং তার বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করতো। ব্যাট হাতে ভালো, বল হাতে ভালো, ফিল্ডিংয়েও চমৎকার। আর সর্বদাই তৈরি থাকে। এমন ক্রিকেটারের জন্য যে বড় একটি প্ল্যাটফর্ম অপেক্ষা করছে, তা আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম। সেই হিসেবে মিরাজ টেস্ট ক্রিকেট খেলছে, যেটি তার অনেক বড় প্রাপ্তি।’
উল্লেখ্য, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টেকনিক্যাল পরামর্শক ছিলেন ল। তখন থেকেই মিরাজকে কাছ থেকে জানেন এবং চিনেন।
প্রতিবেদক: কবিরুল ইসলাম, সম্পাদনা: জাহিদ