
সিলেট প্রতিনিধি । নিউজনেক্সট বিডি ডট কম
উচ্চতর শিক্ষা, গবেষণা ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার জন্য সিলেটের সর্বস্তরের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল সিলেটে একটি বিশ্বমানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৩১মে সিলেটে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান এবং বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের নিমিত্তে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয় (২০১৮ সনের ৩৮ নং আইন) এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা ১ অক্টোবর, ২০১৮ থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়। সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৮ এর ধারা ১১ (১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে নিয়োগ প্রদান করেন।
২০ নভেম্বর ২০১৮ইং তারিখে উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীর কাজে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক পথচলা।
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২১ অর্থবছরের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাথে প্রথম বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। বিগত ২ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ৮১.৫০ নম্বর পেয়ে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া সিলেট বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও অবস্থান সবার শীর্ষে।
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী কর্মপরিকল্পনার ফলাফল আসতে শুরু করে।
জানা যায়, প্রস্তাবিত স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ এর নিমিত্তে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিকরণ, থ্রি-ডিসহ মাস্টার প্ল্যান তৈরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাবনা (উচচ) তৈরির কাজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩২৯৩.৮৩ কোটি টাকা প্রাক্কলনসহ সম্পন্ন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ডিপিপি একনেক-এ অনুমোদনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ডিপিপি বাস্তবায়নের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে সাবেক ভিসির ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
এছাড়া, একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার নিমিত্তে ২০১৯ সালের মে ও জুন মাসে সিলেট বিভাগের অন্তর্গত ১১ টি স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ২ টি ডেন্টাল ইউনিটকে অধিভুক্তি প্রদান করেন । একাডেমিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ০৮ টি অনুষদে অধিভুক্ত কলেজ সমূহ হতে অধ্যাপক পদমর্যাদার ০৮ জন শিক্ষককে ডিন হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস , বিডিএস, বিএসসি ইন নার্সিং, বিএসসি পোস্ট বেসিক ইন নার্সিং কোর্সে অধিভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২৫৪ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে এবং এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম করা হয় ।
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে নতুন করে আরো একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ, সুনামগঞ্জ, পার্কভিউ নার্সিং কলেজ, সিলেট, আর.টি.এম.আই নার্সিং কলেজ, সিলেট, হোয়াইট পার্ল নার্সিং কলেজ, মৌলভীবাজার, সিলেট রেড ক্রিসেন্ট নার্সিং কলেজ, সিলেট এবং এবং সুরমা নার্সিং কলেজ, সিলেট। ব
উল্লেখ্য, সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী চিন্তা থেকেই সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে নামকরণের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ইং তারিখে সিলেট-৩ আসনের নব নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্য হাবিুবর রহমান হাবিব মহান জাতীয় সংসদে দাবি জানিয়েছেন এবং আধাসরকারি পত্র দিয়েছেন। এই দাবির সাথে একমত পোষণ করে আধাসরকারি পত্র দিয়েছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সম্প্রতী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ট্রাস্টের সভায় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মীনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণের অনুমোদন দেয়া হয়।