
পঞ্চগড়: স্ত্রী হত্যার দায়ে নিমাই চন্দ্র বর্মণ (৩১) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় জজ কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ এম এ নুর নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ সালের ১১ (ক) (২০০৩ সংশোধনী) অনুযায়ী আসামির উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নিমাই চন্দ্র জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকার অনিল চন্দ্র বর্মনের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার এলাকার করুণা কান্ত রায়ের মেয়ে সোনালী রাণী সম্পা (২৪) সাথে আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের অনিল চন্দ্র বর্মনের ছেলে নিমাই চন্দ্র বর্মনের (৩১) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই দুই লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে সোনালীর উপর নির্যাতন শুরু করে নিমাই। এ নিয়ে কয়েক বার গ্রাম সালিশ ডাকা হলেও কোন লাভ হয়নি।
২০১০ সালের ৩১ জুলাই সোনালীর বাবা করুণা কান্ত রায় আটোয়ারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও যৌতুকের দাবিতে চলতো নির্যাতন। ২০১২ সালের ১২ নভেম্বর রাতে যৌতুকের দাবিতে আবারও সোনালীকে মারধর শুরু করে নিমাই। পরদিন সকালে নিমাইয়ের বাড়ির পাশের এক আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় সোনালীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৩ নভেম্বর সোনালীর বাবা বাদি হয়ে নিমাইসহ ৬ জনকে আসামি করে আটোয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই দিলীপ কুমার ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ ৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটের আসামিরা হলেন, নিমাই চন্দ্র বর্মন (৩১), নিমাইয়ের বাবা অনিল চন্দ্র বর্মন (৫২), মা রমা বালা (৪৮) ও বোন বিউটি রানী (২২)।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সোমবার সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে জেলা জজ এমএ নুর নিমাই চন্দ্রকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দন্ডের আদেশ দেন এবং অপর ৩ আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। এছাড়াও তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এ সময় বাদি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ওহিদুজ্জামান সুজা এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/প্রতিনিধি/এমএস/ওয়াইএ