
ঢাকা: মৃত্যুর পরও ভারত থেকে বানের পানিতে ভেসে আসা হাতিটি থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশিরা। যেখানে বন্যায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বহু গবাদি পশুর মৃত্যুর খবর ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছিল না, পাওয়া যাচ্ছিল না মানুষের দুর্ভোগের খবর তখন হাতিটিতে বুদ হয়ে আছে মিডিয়া থেকে শুরু করে অনেকে। নিরীহ হাতিটিকে বঙ্গবাহাদুর উপাধি দেয়া থেকে শুরু করে কত হইচই।
এবার ভেসে আসা ‘বঙ্গবাহাদুর’ হাতিটির মৃত্যুর ঘটনা হাইকোর্টে টেনে নিয়েছেন একজন আইনজীবী। এ ঘটনায় একজন বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে হাতিটির মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এক কোটি টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই হাতিটি জীবিত উদ্ধারে ব্যর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আগামী রোববার এ রিট আবেদনের উপর হাইকোর্টে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী।

ফাইল ফটো
রিট আবেদনে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সচিব, বন ও পরিবেশ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জামালপুরের জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার বন্য প্রাণী হিসেবে হাতিটিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখানে রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
এরআগে বুধবার এক লিগ্যাল নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হাতিটির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করতে বলা হয়। এ সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছিল। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রিট আবেদন করেন ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
বন্য হাতিটি ১৬ আগস্ট জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে মারা যায়।
সরিষাবাড়ীর কামরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আহম্মেদ জানান, সরিষাবাড়ীর সোনাকান্দর গ্রামে মাটিচাপা দেওয়া ‘বঙ্গবাহাদুর’ নামের হাতিটির মৃতদেহ বা এর অংশ বিশেষ যাতে চুরি হতে না পারে; সে জন্য গ্রাম পুলিশের ছয় সদস্যের একটি দলকে পাহারায় বসানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী বন সংরক্ষক মো. আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল হাতিটির মৃত্যুর মূল কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছেন।
প্রতিবেদন: ফজলুক হক, সম্পাদনা: মাহতাব শফি/সাইফুল ইসলাম