
লন্ডন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হোতা অ্যাডলফ হিটলার যুদ্ধের শেষদিকে নেশাগ্রস্ত এবং মাদকাসক্ত হয়ে পরেছিলেন। তিনি ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশার বস্তু গ্রহণ করতেন। এমনকি অতিরিক্ত ইনজেকশন ব্যবহার করার ফলে তার শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ক্রমবর্ধমান খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তার মাত্রাতিরিক্ত মাদক নির্ভরতাকে দায়ী করা হয়েছে নতুন একটি বইয়ে।
পুরস্কার বিজয়ী জার্মান লেখক নরমান ওহলার তার বই ‘Blitzed: Drugs in Nazi Germany’তে হিটলারের ব্যাপক মাদকাসক্তির কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ১৯৪৪ সালে স্নায়ুবৈকল্যের কারণে তাকে ইকোডল নামে পরিচিত হেরোইনের মত দ্রব্য সেবন করার জন্য দেয়া হতো। পরবর্তীকালে তিনি এতে আসক্ত হয়ে পরেন।
ওহলার জানান, ১৯৪৪ সালে হিটলারকে হত্যার জন্য পরিচালিত ‘অপারেশন ভ্যালকিরি’র কবল থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি স্নায়ু বৈকল্যে ভুগতে থাকেন। এই অপারেশনের আওতায় হিটলারের ডেস্কের নীচে একটি ব্রিফকেসে বোমা রেখে দেয়া হয়। আকস্মিক বিস্ফোরণে হিটলারের দুই কানের পর্দা ফেটে যায়। তবে তিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
নরমান ওহলার বলেন, ‘আমি আশংকা করি, এরপর তিনি একটি দিনও শান্তিতে কাটাতে পারেননি। এই ঘটনার আগে তিনি মানুষজনের সঙ্গে মেলামেশা করতেন কিন্তু তাকে হত্যাচেষ্টার পর তিনি ক্রমেই উদ্বিগ্ন এবং মানসিক রোগীতে পরিণত হন। হিটলারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক থিওডোর মোরেল তার আগের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইকোডল সেবন করার পরামর্শ দেন। এটি নেশাদ্রব্য হেরোইনের মতো। এটি গ্রহণ করলে নিরুদ্বিগ্ন এবং উৎফুল্ল থাকা যায়।’
লেখক দাবি করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে হিটলারের নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে যে অসংগতি রয়েছে তার মূল কারণ এই মাদকাসক্তি।
যুদ্ধ সম্পর্কিত ব্রিটিশ ঐতিহাসিক অ্যান্টনি বেভর জানান, এই বইয়ের মাধ্যমে ‘ব্যাটল অব বালজ’(১৬ ডিসেম্বর ১৯৪৪-২৫ জানুয়ারি ১৯৪৫) এর সময় হিটলারের সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক সামরিক কৌশল গ্রহণের বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। এটাই ছিল মিত্র শক্তিকে পরাজিত করার জার্মান বাহিনীর সর্বশেষ প্রচেষ্টা।সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
গ্রন্থনা: ফারহানা করিম