
বেইজিং: যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি লেখা একটি চিঠিতে চীনের প্রখ্যাত নারী অধিকারকর্মী তাকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী নারীবাদীরা তার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন।
‘বিগ র্যাবিট’ নামে খ্যাত ২৭ বছর বয়সি চীনের নারী অধিকার কর্মী ঝেং চুরান সম্প্রতি নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে একটি খোলা চিঠি পাঠান। ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিটি নিজের ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টেও পোস্ট করেন ঝেং। তিনি এতে ট্রাম্পকে সম্বোধন করে লিখেন, ‘হে ট্রাম্প, নারীবাদীরা আপনাকে পর্যবেক্ষণ করছেন।’
সোমবার(১২ ডিসেম্বর) ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে তিনি চিঠিটি পোস্ট করেন। এতে লিখেন, ‘আমরা অনেক দূরে চীনে বাস করি। কিন্তু যৌন বিষয়ক আপনার আচরণের খবরগুলো আমরা দেখেছি। লিঙ্গ সমতা বৈশ্বিক একটি ইস্যু এবং নারীবাদী আন্দোলন আপনার জন্য থেমে যাবে না। যারাই নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য এবং সহিংস কর্মকাণ্ড করবে তাদের এজন্য মূল্য দিতে হবে। আমার ধারণা, আপনি জানেন, বিশ্বব্যাপী নারীবাদীরা আপনার প্রতি খেয়াল রাখছে।’
ঝেং জানান, চিঠিতে তিনি ট্রাম্পের লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, চীনেও এটিকে বড় কোন ব্যাপার হিসেবে দেখা হয় না। নারীর প্রতি ট্রাম্পের আচরণকে গ্রাহ্যই করে না চীনা সমাজ। ফলে তার দেশে বিষয়টি নিয়ে কাউকে খুব বেশি ক্ষোভ করতে দেখা যায়নি।
নারীবাদী এই কর্মী বলেন, ‘চীনারা বলে ট্রাম্প একজন উন্মাদ কিন্তু তিনি হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে ভালো। চীনের মানুষ হিলারিকে প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চীনাদের ধারণা দেশের উন্নয়নের জন্য নারীবাদ এবং লিঙ্গ সমতার মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া উচিৎ। আমি মনে করি, এটা ভুল এবং ভয়ংকর একটি চিন্তা।’
ঝেং চুরানের ধারণা ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নারী অধিকার কর্মীদের দমন করা হবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকারও তার প্রতি এধরনের আচরণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, নারীর প্রতি ট্রাম্পের আচরণকে যারা সমর্থন করেন তাদের এটা বুঝানো যে, চীনের নারীবাদীরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেবল বসে বসে তা দেখার চেয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিৎ।’
ঝেং চুরান চীনের ফেমিনিস্ট ফাইভ(পাঁচ নারীবাদী)এর অন্যতম। গত বছর নারী দিবসে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ আটক করেছিল। পরবর্তীকালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের আহ্বানে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।সূত্র: বিবিসি
গ্রন্থনা: ফারহানা করিম, সম্পাদনা: জাহিদ