
দেলোয়ার মহিন, ঢাকা: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদফতর বাজারকে স্থীতিশীল রাখতে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছে। ২০১১ সালের পর থেকেই এ কার্যক্রম চলছে। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ভোক্তা ৬৪ হাজার ৮২০টিরও অধিক বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায়দোষী সাব্যস্ত করে ১৭ হাজার ৯৮২টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। তারমধ্যে ৩৯৮ জন অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে মোট ৭ লাখ ২৮ হাজার ২২৫ টাকা প্রদান করার পর অবশিষ্ট ১৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৩২৫ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।
মোড়কজাত পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে বিক্রি করার কারণে ৩৯৮ জন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর’এ অভিযোগ করে। আর এই সুবাধে এই প্রতিষ্ঠান তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে মোট ২ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদফতরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ অনুযায়ী ৩৭-৪০ ধারায় (মোড়কের গায়ে সংশ্লিষ্ট পণ্যের খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, ইত্যাদি লেখা না থাকা, পণ্য ও সেবা মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্য দাবি করা) ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাজার তদারকি করে ৭ হাজার ৪৬২টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
৪১-৪৫ ধারায় (ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়, ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত পণ্য বিক্রয়, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরন, মিথ্য বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ করা) ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাজার তদারকি করে ৭ হাজার ৭৯৯টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার ২০০ জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
৪৬-৪৯ ধারায় (ওজনে, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে, পরিমাপে, দৈর্ঘ্য পরিমাপ ফিতা বা অন্য কিছুতে কারচুপি করা) ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাজার তদারকি করে ১ হাজার ৩৩টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ৩৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
৫০-৫৫ ধারায় (পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণ্ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয করা, সেবা গ্রহিতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারিকার্য করা, অবহেলা দ্বারা সেবা গ্রহিতার অর্থ, স্বাস্থ্য, ইত্যাদির হানি ঘটানো) ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাজার তদারকি করে ২ হাজার ৯২২টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৫০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
মোট জরিমানা আদায়ের পরিমাণ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫০ টাকা আদায় করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদফতরের মহাপরিচালক কর্তৃক ৬ এপ্রিল ২০১০ তারিখে বাজার তদারকির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন, ২০০৯ বাস্তবায়ন শুরু করা হয়।
২০১১ সাল পর্যন্ত জনবল স্বল্পতার কারণে খুব সীমিত পর্যায়ে বাজার অভিযান মূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। পরবতিৃতে ক্রমান্বয়ে জনবল বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এ কার্যক্রম জোরদার হতে থাকে। সাধারণ ভোক্তাদের সুবিধার্থে ভোক্তা সব সময় কাজ করে থাকে। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাজার তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/ডিএম/এমআই/এসজি