
ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামালপুরের আট আসামির মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আট আসামির মধ্যে ৬জন পলাতক রায়েছেন। এদের গ্রেফতারে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
মোট আট আসামির মধ্যে গ্রেফতার আছেন জামালপুরের সাবেক জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শামসুল হক ও এস এম ইউসুফ আলী। মামলায় অন্যরা পলাতক রয়েছেন। এরা হচ্ছেন, রাজাকার আব্দুল মান্নান, আব্দুল বারী ও আলবদর নেতা আশরাফ হোসেন, শরীফ আহমেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মো. হারুন ও মো. আবুল কাসেম।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, রাজাকার আব্দুল মান্নান, আব্দুল বারী ও আলবদর নেতা আশরাফ হোসেন। আদালত রায়ে বলেছে, সরকার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারবে।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, অ্যাডভোকেট শামসুল হক, ইউসুফ আলী, শরীফ আহমেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মো. হারুন ও মো. আবুল হাসেম। সোমবার বেলা পৌনে ১১টা থেকে প্রায় একঘণ্টা ২৮৯ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিনটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এর মধ্যে প্রমাণিত ২ নম্বর অভিযোগে আসামি মো. আশরাফ হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান, মো. আব্দুল বারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পলাতকদের ব্যপারে ট্রাইব্যুলাল বলেছেন, এদের গ্রেফতারে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নিতে পারে সরকার।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ বলেছেন এ রায়ে আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত শামছুল হক ও ইউসুফ আলীর আইনজীবী গাজী এইচ তামিম রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের প্রারম্ভিক বক্তব্যের পর বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ২৮৯ পৃষ্ঠার রায়ের সার সংক্ষেপ পড়া শুরু করেন। এরপর বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী রায়ের বাকি অংশ পড়েন এবং সবশেষে বিচারপতি আনোয়ারুল হক সাজা ঘোষণা করেন।
এর আগে কারাগারে থাকা সাবেক জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শামসুল হক ও এস এম ইউসুফ আলীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সোমবার সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় তাদের। ট্রাইব্যুনালে পৌঁছানোর পর তাদের হাজতখানায় রাখা হয় বলে রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম ঝিনুক জানান।
এ মমলায় এ দু’জন ছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ আহাম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মো. আশরাফ হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান, মো. আব্দুল বারী, হারুন ও মো. আবুল হাশেমকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ শেষ করা হয়।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এফএইচ/এমএস/এসআই