
শরীফ খিয়াম, ঢাকা: জলসীমা দিয়ে অনুপ্রবেশকালে মিয়ানমার ছেড়ে আসা শরণার্থীদের ৯৪টি নৌকা ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে গত তিন বছরে ‘পুশব্যাক’করা এসব নৌকায় এক হাজার ৭৪৮ জন শরণার্থী ছিলেন।
আসন্ন অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে সরকারের অর্থ বিভাগের প্রকাশ করা এক নথিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বিগত তিন বছরে এক হাজার ৭৪৮ জন মিয়ানমার নাগরিককে ৯৪টি বোটসহ পুশব্যাক করা হয়েছে।’ নথিটির একটি কপি নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র সংগ্রহে রয়েছে।
এর আগে ২০১২ সালে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের দাঙ্গায় কমপক্ষে ৯০ হাজার লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে ওই সংঘর্ষ চলাকালে দুই হাজার ৫২৮টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। যার বেশিরভাগই ছিলো রোহিঙ্গাদের। ওইসময় প্রচুর রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন।
সে সময় এ নিয়ে বেশ সরব ছিলো দেশীয় গণমাধ্যমগুলো। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া, না দেয়া নিয়ে আলোচনাও হয়েছিলো প্রচুর। ওই দাঙ্গায় সরকারিভাবে ৮৮ জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছিলো মিয়ানমার। যার মধ্যে ৫৭ মুসলিম এবং ৩১ বৌদ্ধ।
এর আগে ১৯৮২ সালে মিয়ানমারের তদানীন্তন সামরিক সরকার এক ফরমান জারি করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করে। ১৯৯১-৯২ সালে দুই লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থী ওই সামরিক জান্তার নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ১৯টি শরণার্থী শিবির তৈরি করে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়। ২০০৫ সাল অবধি তাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়াও অব্যাহত ছিলো।
এদিকে এবার বিশ্ব শরণার্থী দিবসের (২০ জুন) ঠিক আগে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ঢাকা প্রতিনিধি স্টিনা ল্যিউংডেল এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অস্ত্রসহ মাদক ও মানব পাচারকারীদের তৎপরতার নতুন খবর আশংকার সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা দানা বেঁধেছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। তাই তাদের অনেককেই বিপজ্জনক সমুদ্রপথে নৌকাযোগে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া কিংবা অন্য কোনো গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন।’
অন্যদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সাম্প্রতিক সাফল্য সম্পর্কিত ওই নথিতে আরো জানানো হয়েছে, গত তিন বছরে তারা ৬৫৫ জন বিপন্ন জেলেসহ ২১১টি ‘বোট’উদ্ধার করেছে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসকে/জাই